Table of Contents
Bahok News Bureau: বর্তমান যুগে আমরা যে বাথরুম (Bathroom) ব্যবহার করি তা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বাথরুম, তবে আগে কিন্তু এমন ব্যক্তিগত বাথরুম ছিল না। তখন সবাই একসাথে একটি বাথরুম ব্যবহার করতেন। আমরা এখন যাকে বাথরুম বলি তা ইউরোপে (Europe) ১৮০০এর দশকের শেষের দিকে ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল। আজ আমরা আপনাদের বলতে চলেছি প্রাচীনকালের বাথরুম সম্পর্কে ১০টি আশ্চর্যজনক তথ্য, যা আপনি শুনলে অবাক হবেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। (Amazing Ancient Bathroom Facts)
১. পাবলিক বাথরুম ছিল সর্বজনীন:
রোমান সাম্রাজ্য থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত নারী ও পুরুষরা সকলেই একসঙ্গে বাথরুমে স্নান করতেন। এই স্থানগুলো সরকার দ্বারা পরিচালিত হতো। এই মাল্টি-পার্পাজ বিল্ডিংয়ে থাকতো উষ্ণ, সাধারণ এবং শীতল জলের পৃথক সুইমিং পুল। একসাথে প্রায় ১৬০০ জন মানুষ এখানে স্নান করতে পারতেন।
২. খাওয়া-দাওয়া এবং আলাপ-আলোচনা করার জন্য বাথরুম ব্যবহৃত হত :
প্রাচীনকালে অনেকেই স্নানের জন্য নয়, বরং বাথরুমে যেতেন অন্যের সঙ্গে কথা বলতে। রোমানরা এই বাথরুমে একইসঙ্গে খেতেন, খেলা করতেন, দাঁত ব্রাশ করতেন। এই কাজগুলি তাঁদের কাছে একেবারে একদমই স্বাভাবিক ছিল এবং বিভিন্ন কার্যকলাপ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতেও তাঁদের কোনো সমস্যা হতো না।
৩. ব্যক্তিগত বাথরুম ছিল না:
প্রাচীনকালে এমনভাবে বাথরুম তৈরি করা হয়েছিল, যাতে একসঙ্গে অনেক লোক সেখানে যেতে পারেন এবং রোমানরা এটিকে একটি সামাজিক কার্যকলাপ হিসাবে মনে করতেন।
৪. পুরো পরিবারের জন্য একটি বাথরুম:
রোমান সাম্রাজ্য থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত, বাথরুমে পুরুষ এবং মহিলা একসাথেই যেতেন। কিছু সময় পরে, মানুষকে একটি বাথরুম তার পুরো পরিবারের জন্য দেওয়া শুরু হয়। সেই সময়ে অন্তর্বাস পরে রাস্তায় হাঁটা খুবই সাধারণ বিষয় বলে মনে করা হতো।
৫. প্রত্যেককে শৌচাগার পরিষ্কার করার স্পঞ্জ শেয়ার করতে হতো:
প্রাচীন রোমে টয়লেট পেপার বলে কিছু ছিল না, তাই মানুষ তখন কাঠের লাঠিতে স্পঞ্জ বেঁধে রাখতো। স্পঞ্জ ব্যবহারের পর লবণ জলের বালতিতে তা রাখা হতো। এরপর অন্যরা সেই স্পঞ্জ পুনরায় ব্যবহার করত।
৬. গ্রীষ্মকালে শৌচাগারে সবচেয়ে বেশি দুর্গন্ধ থাকতো:
মধ্যযুগীয় বাথরুমের মেঝেতে গর্ত করা থাকতো। মানুষের মলমূত্র ওই গর্তে ফেলা হতো। এমন একটি ব্যবস্থা ছিল, যার মাধ্যমে মলমূত্র সরাসরি বেসমেন্টে পৌঁছে যেত। এর থেকে যে গন্ধ বের হতো তা অসহনীয় ছিল।
৭. বাড়ির বাইরে যেতে হতো:
মধ্যযুগীয় যদি কাউকে কখনো বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হতো, তবে তাকে কোনো পাব্লিক প্লেস বা পুল খুঁজতে হতো। এই যুগের শেষের দিকে মানুষ স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। বর্তমানে সরকার পাবলিক শৌচাগারগুলিতে আরো তহবিল বিনিয়োগ করে, যাতে শহর পরিষ্কার থাকে।
৮. রাস্তায় আবর্জনা ফেলা হতো:
প্রাচীনকালে শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদেরই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছিল। তাই বাড়িতে টয়লেট না থাকার কারণে, এডিনবার্গের লোকেরা “গার্ডিলু!” (“Gardyloo!”) বলে চিৎকার করে রাস্তায় মলমূত্র ছুঁড়ে ফেলতেন, যাতে পথচারীরা এ বিষয়ে আগাম সতর্ক হন। উল্লেখ্য, গার্ডিলু শব্দটি ফরাসি শব্দ ‘প্রেনেজ় গারদে আ লিউ১’ (Prenez garde a l’eau!) থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘জল হতে বাঁচুন’। ১৯ শতকে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত এই প্রথা চালু ছিল।
৯. বাথরুমের বর্জ্য মানুষকে পরিষ্কার করতে হতো:
১৮ শতকে সমাজে ধীরে ধীরে শৌচাগারের ব্যবহার চালু হয়। যার ফলে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শৌচাগারের ব্যবহার সাধারণ ছিল। জমে থাকা মলমূত্র অপসারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কিছু লোককে, যারা এই কাজ রাতের বেলায় করতেন। বড়ো ও ধনী জেলাগুলোতে ২৪ ঘণ্টাই ‘নাইটম্যান’-এর পরিষেবা চালু থাকতো। যদিও এই পরিষেবা উপভোগ করার সুযোগ দরিদ্র এলাকায় খুবই কম পাওয়া যেত।
১০. সংক্রমণের কেন্দ্র ছিল :
ইউরোপীয় শহরগুলিতে প্রথম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে কলেরা এবং টাইফয়েডে জ্বরে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত হারে কমে যেতে দেখা যায়। এই রোগগুলি দূষিত জলের মাধ্যমে ছড়ায়, এটা আজ মানুষ বুঝে গেলেও, আগে এই বিষয়টি বুঝতে অনেক বছর লেগে গেছিল গবেষকদের। (Amazing Ancient Bathroom Facts)
আরও পড়ুন: Kala Ghaoda Art Festival: কালা ঘোড়া ফেস্টিভ্যালের ইতিহাস, ভারতের উৎসব- পর্ব ১
পড়ুন: বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩
পড়ুন: বাহক শারদীয়া সংখ্যা / পুজো ম্যাগাজিন ১৪২৯
PDF টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন – বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩
ঈদ সংখ্যা কেমন লাগলো, ফেসবুক পেজ ছাড়াও নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আপনার নাম দিয়ে মতামত দিতে পারেন।
এছাড়াও আমাদের পূর্বে প্রকাশিত কিছু সংখ্যা সমূহের Pdf নিচে দেওয়া হল।