
Bahok News Bureau: মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের অফিসিয়াল যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে আয়রন ম্যানের (Iron Man) হাত ধরে। ১৫ বছরের মাথায় মার্ভেল আগের থেকে অনেক বেশি গল্প নিয়ে হাজির হয়েছে দর্শকদের জন্য। ২০২৩ সালে অ্যান্টম্যান সিরিজের তৃতীয় সিনেমা ‘অ্যান্টম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প: কোয়াআন্টাম্যানিয়া’-এর (Ant-Man and the Wasp: Quantamnia) হাত ধরে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের পঞ্চম ফেজ শুরু করেছে। এই সিনেমায় দর্শকদের পরিচয় ঘটে ‘ক্যাং দ্য কনকুইরার’ (Kang the Conqueror)-এর ভ্যারিয়েন্টের সঙ্গে। এই ক্যাং যে ‘লকি‘ (Loki Web Series) ওয়েব সিরিজের ক্যাং-এর থেকে আলাদা, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ক্যাংকেই মার্ভেলে নতুন ফেজগুলোতে ভবিষ্যতে মূল ভিলেন হিসাবে তুলে ধরা হবে বলে দাবি করা হয়েছে।
অ্যান্টম্যান সিনেমার দৌলতে দর্শকরা নতুন এক জগতের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার সুযোগ পায়। এই সিনেমায় মূল চরিত্র সহ অন্যান্য চরিত্রদের সংকুচিত (Shrink) হয়ে স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক উভয় দুনিয়ার বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। অ্যান্টম্যানকে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের একাধিক সিনেমায় দেখা গেছে। বিভিন্ন সিনেমায় সাধারণত অ্যান্টম্যানকে যেখানে কৌতুকপ্রদ চরিত্র হিসাবে দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে, ‘অ্যান্টম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প: কোয়াআন্টাম্যানিয়া‘ সিনেমায় অন্যই রূপে প্রতিফলিত হতে দেখা যায় অ্যান্টম্যানকে। যাই হোক, অ্যান্টম্যানের সংকুচিত হয়ে যাওয়া কল্পবিজ্ঞান গল্পটি যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে এইরকম বেশ আরও কিছু সিনেমা রয়েছে, যেগুলো দেখা যেতে পারে। নিম্নে অ্যান্টম্যানের মতো সংকুচিত (Shrink) হওয়ার ১০টি জনপ্রিয় সিনেমার নাম উল্লেখ করা হল।
১. ‘দ্য ইনক্রেডিবল শৃংকিং ম্যান’, ১৯৫৭ | (The Incredible Shrinking Man, 1957):
এটি ১৯৫০ দশকের কল্পবিজ্ঞান সিনেমা। মূল চরিত্রের সংকুচিত হয়ে গিয়ে বেসমেন্টে সংঘর্ষ করে বেঁচে থাকার গল্পকে কেন্দ্র করে সিনেমাটি আবর্তিত। বেশ গম্ভীর প্রকৃতির ও রোমাঞ্চকর সিনেমা হিসাবে এটি পরিচিত।
২. ‘দ্য ফ্যান্টাস্টিক ভয়েজ’, ১৯৬৬ | (The Fantastic Voyage, 1966):
একটা সাধারণ ও দুর্দান্ত কল্পবিজ্ঞান প্লটকে কেন্দ্র করে সিনেমাটি আবর্তিত। সিনেমায় এক বিজ্ঞানীকে গুরুতর আহত হয়ে যেতে দেখা যায়। তাঁকে বাঁচাতে চিকিৎসকদের তাঁর শরীরে প্রবেশ করার প্রয়োজন বোধ হয়। এই অবস্থায় একটা পুরো চিকিৎসকের দলের মাইক্রোস্কোপিক স্তরে সংকুচিত হওয়ার ঘটনা ও রোমাঞ্চকে কেন্দ্র এগোয় পুরো কাহিনী।
৩. ‘অ্যান্টম্যান’, ২০১৫ | ( Ant Man, 2015):
এই মূলত একটি সুপারহিরো সিনেমা। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন পল রুড় (Paul Rudd) এই সিনেমা যদিও মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের অন্যান্য সিনেমার থেকে আলাদা। এতে হাই ভোল্টেজ অ্যাকশনের দৃশ্য বা ডার্ক রোমাঞ্চকর ঘটনা নেই। কিন্তু, খুবই সুন্দরভাবে হাসির ছলে এক পিতা-কন্যার সম্পর্ক এবং এক সাধারণ মানুষের অ্যান্টম্যান হয়ে ওঠার কাহিনী প্রতিফলিত হয়েছে এই সিনেমায়। এই সিনেমা অ্যান্টম্যানের অরিজিন স্টোরি (Origin Story) নামেও পরিচিত।
৪. ‘দ্য ইনক্রেডিবল শৃংকিং ওমেন’, ১৯৮১ | (The Incredible Shrinking Woman, 1981):
এই কাহিনীর মিল রয়েছে ১৯৫৭ সালের ‘দ্য ইনক্রেডিবল শৃংকিং ম্যান’ সিনেমার সঙ্গে। যদিও, এটি পুরোই বিপরীত। ‘দ্য ইনক্রেডিবল শৃংকিং ম্যান’ যেখানে কিছু কিছু স্থানে গম্ভীর এবং শেষে নৈরাশ্যবাদী ও দার্শনিক ভাবযুক্ত ছিল। সেখানে ‘দ্য ইনক্রেডিবল শৃংকিং ওমেন’ সিনেমাটি পুরোপুরী কৌতুকপ্রদ, একটু বোকাবোকা ও হাসিখুশি প্রকৃতির ছিল।
আরও পড়ুন: Chocolate Day 2023 Date, History & Significance: চকলেট ডে কবে? ইতিহাস ও তাৎপর্য
৫. ‘হানি, আই শ্রাঙ্ক দ্য কিডস’, ১৯৮৯ | (Honey, I Srunk the Kids, 1989):
এক বুদ্ধিমান কিন্তু বেপরোয়া বিজ্ঞানীর সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট এবং তাঁর পরিবার ও পড়শীর সংঘর্ষ-রোমাঞ্চকে কেন্দ্র করে সিনেমাটি আবর্তিত। গল্পে এক বিজ্ঞানীর যন্ত্রের গোলযোগে তাঁর সন্তান ও প্রতিবেশীদের সন্তান একটা পোকার আকারে সংকুচিত হয়ে যায়। প্রথমে সংকুচিত কিশোর-কিশোরীদের প্রথমেই খুঁজেই পাওয়া যায় না। এই অবস্থায় আবার স্বাভাবিক আকারে ফিরে আসার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যায় সিনেমা। সিনেমাটি যেখানে কোথাও বেশ কৌতুকপ্রদ, সেখানে কোনো কোনো স্থানে আবার খুবই গম্ভীর। সবমিলিয়ে এক দুর্দান্ত সিনেমা ‘হানি, আই শ্রাঙ্ক দ্য কিডস’।
৬. ইনারস্পেস, ১৯৮৭ | (Innerspace, 1987):
এই সিনেমাটি অনেকটা ‘ফ্যান্টাস্টিক ভয়েজ’-এর মতোই। তবে কৌতুকরসযুক্ত। এক্ষেত্রে একটি দল নয়, বরং এক মাইক্রোস্কোপিক আকারের মানুষ এক ছোট্ট যানে চড়ে দুর্ঘটনাবশত এক সুপারমার্কেট ক্লার্কের শরীরে প্রবেশ করে ফেলে। ওই কাহিনীকে কেন্দ্র করে এগোয় পুরো গল্প।
আরও পড়ুন: Propose Day 2023 Date, History & Significance: প্রপোজ ডে কবে? ইতিহাস ও তাৎপর্য
৭. ‘অ্যান্টম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প: কোয়াআন্টাম্যানিয়া’, ২০১৮ | (Ant-Man and the Wasp: Quantamnia, 2018):
এই সিনেমাটি ২০১৫ সালের ‘অ্যান্টম্যান‘ সিনেমার সিক্যুয়েল। একইসঙ্গে সিনেমাটি ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার‘ (Avengers: Infinity War) ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম‘ (Avengers: Endgame)-এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ, ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার’-এর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় এই সিনেমায় এবং এই সিনেমার সূত্র ধরেই ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’-এর কাহিনী নতুন মোড় নেয়।
৮. ‘ডলম্যান’, ১৯৯১ | (Dollman, 1991):
এই সিনেমা এক মানুষের সংকুচিত হওয়ার গল্পকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। খুবই কম বাজেটের এই সিনেমায় সংকুচিত ব্যক্তিকে মাইক্রোস্কোপিক স্তরে সংকুচিত হতে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে, মূল চরিত্রকে সংকুচিত করা হয় ঠিকই, কিন্তু মানুষের সঙ্গে বার্তালাপ বা যোগাযোগ করার মতো পর্যায়ে আকার বজায় রাখা হয়।
আরও পড়ুন: Howrah Bridge History: হাওড়া ব্রিজের জন্মদিনে জানুন হাওড়া ব্রিজের ইতিহাস
৯. ‘দ্য অ্যান্ট বুলি’, ২০০৬ | (The Ant Bully, 2006):
সিনেমাটি মূলত অ্যানিমেটেড মুভি। সিনেমায় ১০ বছর বয়সী এক ছেলেকে রাগের বশে পিঁপড়ের এক সমগ্র কলোনিকে মেরে দিতে দেখা যায়। তাঁর কর্মকান্ডের ফলস্বরূপ এক বিশেষ শক্তিধারী পিঁপড়ে তাঁকে সংকুচিত হয়ে যাওয়ার অভিশাপ দেয়। পরবর্তী রোমঞ্চকে নিয়েই এগোয় সিনেমাটি। সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তথা ‘উইজার্ড’ পিঁপড়ের চরিত্রে কন্ঠ দেন জনপ্রিয় অভিনেতা ‘নিকোলাস কেজ’ (Nicolas Cage)।
১০. ‘ডাউনসাইজিং’, ২০১৭ | (Downsizing, 2017):
জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও স্থানের অভাব বর্তমানে এক উল্লেখযোগ্য ইস্যু। এই ইস্যু সমাধানের উদ্দেশ্যেই মানুষকে আকারে ছোট করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এগোয় সিনেমার কাহিনী। মূলত, আকার ছোট হলে, মানুষ কম স্থানাধিকার করবে, ফাঁকা স্থান অনেক বেশি পাওয়া যাবে এবং পৃথিবীর অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে এই ধারণাকে সঙ্গে নিয়ে মানুষকে আকারে ছোট করলে দেখা দিতে শুরু করে নতুন সমস্যা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই গড়ে তোলা হয়েছে সিনেমা ‘ডাউনসাইজিং’।