আন্টার্কটিকায় হওয়া তুষারপাতে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে, নিউজিল্যান্ডের গবেষকরা এমনটাই দাবি করলেন। প্লাস্টিকের অবাধ ব্যবহারের কারণে প্লাস্টিক এবার পুরো বাস্তুতন্ত্রের সঙ্গে মিশে গেছে। বিজ্ঞানীরা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন যে, আন্টার্কটিকায় এই প্লাস্টিক বৃষ্টি বরফের গলনকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যা প্রভাবিত করতে পারে আন্টার্কটিকার বাস্তুতন্ত্রকেও।
এর আগেও আন্টার্কটিকায় মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। তবে, তাজা তুষারে এই প্রথম মাইক্রোপ্লাস্টিক দেখতে পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এই সমস্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক আকারে বেশ ক্ষুদ্র। দৈর্ঘ্যে এটি একটি চালের থেকেও ছোট হতে পারে। এই গবেষণাটির আয়োজক ছিলেন ক্যান্টারবেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি পড়ুয়া অ্যালেক্স অ্যাভিস এবং গবেষণায় অংশগ্রহণ করেছেন ডাঃ লৌরা রেভেল। উল্লেখ্য, এই গবেষণাপত্র বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘দ্য ক্রায়োসফিয়ার’-এ প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার জন্য অ্যাভিস ২০১৯ সালে ‘রোজ় আইস সেল্ফ’ থেকে তুষারের কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন। গবেষণায় তিনি দেখেন যে, পরিবেশের মাইক্রোপ্লাস্টিক এবার তুষারে মিশতে শুরু করেছে। সংগৃহীত প্রত্যেক ১৯টি নমুনার মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। প্রতি লিটার গলিত তুষারে ২৯টি করে মাইক্রোপ্লাস্টিক অংশবিশেষ পাওয়া গেছে।
মোট কত রকমের মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে?
গবেষণাপত্রে ভিত্তিতে জানা গেছে যে, ১৩ রকমের মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পিইটি (PET) অন্যতম। উল্লেখ্য, এই পিইটি কোলা জাতীয় পানীয়র বোতল ও কাপড় বানানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয়েছে যে, এই মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলি হয় বায়ুবাহিত হয়ে এসেছে, নয়তো পর্যটকদের মাধ্যমে এসেছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক বর্তমানে প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যাচ্ছে। সেই স্থানটা হিমালয়ের পাদদেশ হোক বা আমাদের ফুসফুস। আমরা যত প্লাস্টিক পরিবেশে দিচ্ছি, ভিন্নরূপে তা আমাদের কাছে ফেরত আসছে। উল্লেখ্য, এই মাইক্রোপ্লাস্টিক মানবদেহে প্রবেশ করলে মানবকোষের ক্ষতি করতে পারে, যা মানুষের জন্য কিন্তু মোটেই ভালো খবর নয়। এহেন, তুষারপাতে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি নিঃসন্দেহে মানবপ্রজাতির জন্য ইতিবাচক খবর নয় বলে দাবি করা হয়েছে।