বাহক নিউজ় ব্যুরো: ‘ভবিষ্যতেও খেলে যেতে চাই, এটাই ধ্যানজ্ঞাণ’- দৃঢ়প্রত্যয়ী ভারতীয় কিংবদন্তী ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর মূলমন্ত্র এখন এমনই। সুনীল ছেত্রী বরাবর পদশিল্প প্রদর্শনে পারদর্শী, তাঁর গুণ মুগ্ধ ভক্ত ছড়িয়ে আছে দেশজুড়ে, এমনকি কাঠমান্ডু থিম্পু ব্যাঙ্কক এর মতো এশিয়ান নগরীতেও।
এদিন ছিল, ভারত বনাম নেপাল ম্যাচ। দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন এসএএফএফ এর এলিমিনেটর ম্যাচ, মালদ্বীপে। তাতে ৮৩ মিনিটের মাথায় বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দিল সুনীল ছেত্রী। সেই সাথেই গোটা স্টেডিয়াম ফেটে পড়ল হর্ষোল্লাসে, স্ট্যান্ডিং ওভেশন। আরে কারণটাও যে বিরাটটটট। ব্রাজিলীয় ফুটবল কিংবদন্তী নেসিমেন্টো ডি পেলে র সাথে সমান গোলসংখ্যায় পৌঁছেছে ভারতীয় এক ফুটবলার। সুনীল ছেত্রী। গ্যালারির স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে “সুনীল ইউ বিউটি দ্য ইনভিন্সিবল, হাইয়েস্ট গোল স্কোরার অফ এশিয়া। কংগ্রাচুলেশন”। কাঠমান্ডু বা কেরল থেকে আসা দর্শকরা সকলেই আনন্দে কলরব, হাত্তালি জুড়েছেন। সত্যিই এটাই গেম স্পিরিট। কাঠমান্ডু থেকে কন্যাকুমারিকা, মালদ্বীপ থেকে মালবাজার যেন এক সুতোয় গাঁথা, ‘সবার সেরা তুমি ফুটবল’।
“প্রতিটা দিন নতুন কিছু নিয়ে আসে, একেকটা নতুন রাস্তা নবোদ্যমে লড়াই। আমি ধারাবাহিকতা এবং ফিটনেস বজায় রাখার চেষ্টা করছি। জীবনে চ্যালেঞ্জ সবসময়ই উপভোগ্য” বললেন বিজয়ী নায়ক সুনীল ছেত্রী। “আমাদের ছেলেরা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মাথা ঠান্ডা রেখে যেভাবে সামলেছে তা প্রশংসনীয়। আমার এই রেকর্ড প্রতিটা টিমমেট, পরিবার, বন্ধু ও শুভচিন্তকদের প্রতি উৎসর্গীকৃত, তাঁরা না থাকলে এতোদূর আসা সম্ভব হত না” তিনি আরও যোগ করলেন।
বাইচুং ভুটিয়ার একদা সতীর্থ হিসেবে অনেক অভিজ্ঞতাই অর্জন করেছেন তিনি। বহু বড় বড় নাম এর সাথে খেলেছেন পক্ষ এবং বিপক্ষ হিসেবে। প্রশংসায় পঞ্চমুখ তাঁরাও।
প্রসঙ্গত, এই তালিকায় পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চান রোনাল্ডো ১১২ গোল এর মালিক হিসেবে প্রথম স্থানে এবং আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি ৭৯ গোল দিয়ে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছেন। ১২৩ ম্যাচে ৭৭ গোল করে আরব আমিরশাহীর মাখবত আলির সাথে যুগ্ম তৃতীয় স্থানে সুনীল।
সুনীল ছেত্রী আশার আলো দেখছেন মহিলা ফুটবলেও। উন্নততর পরিকাঠামো ও প্র্যাকটিস এর মধ্য দিয়ে মহিলা ফুটবলেও সোনার যুগ শুরু হতে চলেছে বলে তাঁর অভিমত।
প্রসঙ্গত, বাহরিন কে এএফসি তে ৫-০ উড়িয়ে সদ্য শিরোনামে এসেছে ডিনারবাঈ এর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বালা-আশালতা দেবীর টিম ইন্ডিয়া। সব মিলিয়ে ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের জন্য দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকল। আইএসএল এবং ব্যাঙ্গালুরু এফসির হয়ে সেরা গোলদাতা যখন দেশের জার্সিতেও মাঠ কাঁপায়, তখন বুকের বাঁদিকে আবেগ পুঞ্জিভূত হয় বৈকি!