বাহক নিউজ় ব্যুরো: বঙ্গে নিম্নচাপের জেরে বহু জায়গাতেই মুশলধারে একনাগাড়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে বাংলার একাধিক জেলার বহু এলাকাই জলমগ্ন। তবে, জলমগ্নের তালিকায় রয়েছে কি শুধু কলকাতা? জলমগ্ন চোখের আড়ালে থেকে যাওয়া জেলাগুলিও। পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ এলাকা জলের তলায়। মাটির বাড়ি হোক বা পাকা ঘর, জলের তলায় যেতে বাকি নেই কিছুই। এমনকি, জলের তলায় এলাকার হাসপাতালও। একদিকে, বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন। অপরদিকে মোবাইল পরিষেবাও ব্যাহত। প্রসূতি মহিলাদের কোনওরকমের উদ্ধার করা হচ্ছে। বর্তমানে এই সবকিছুই সহ্য করে চলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দারা।
চারিদিক জলে থইথই করছে। পটাশপুর, ভগবানপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ভয়ঙ্কর বন্যা দেখা দিয়েছে। যাঁদের একমাত্র আশ্রয় তাঁদের বাড়ি, টালি বা খড়ের ছাউনি দিয়া একমাত্র বাড়ি, তাঁদের প্রচণ্ড অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। একমাত্র আশ্রই বর্তমানে জলের তলায়। গ্রামের ভেতরে আটক হয়ে পড়া মানুষ বন্যার কারণে সহজে বাইরে বেরতে পারছে না। আবার, কোনো প্রয়োজনে গ্রামের বাইরে এসে থাকা মানুষ তাঁদের ওপর একমাত্র নির্ভরশীল পরিবারের কাছেও সহজে পৌঁছাতে পারছে না। দৈনন্দিন কাজ তো ব্যাহত হয়েছেই, এর উপরে রোজগারও বন্ধ, যার যা সঞ্চয়, সেটাও শেষ হয়ে যাওয়ার পথে বা হয়ে গেছে। খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। শুধুতাই নয়, গ্রামের স্থানীয় হাসপাতালেও জল ঢুকে গেছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি অনুযায়ী, তাঁর বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ এই। জলের স্তর একটুও নামে নি। সরকারি নলকূপ জলে নিমজ্জিত, হাসপাতালের সামনে কোমর পর্যন্ত জল, হাসপাতালের ভেতরেও জল ঢুকে গেছে। উল্লেখ্য, তিনি ভগবানপুর থানার অধীনে থাকা ব্লক ভগবানপুর-১ –এর বাসিন্দা। তিনি জানিয়েছেন যে, ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও জল ঢুকে গেছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে ‘স্যানিটাইজেশন’ বজায় থাকার ভাবনাচিন্তা ‘সোনার পাথর বাটি’-এর অস্তিত্বের সমতুল্য।
একদিকে যেমন ডিভিসি-এর তরফে অনবরত জল ছাড়তে থাকছে। অপরদিকে, ভরা কোটাল থাকার কারণে জলস্তর বাড়তে থেকেছে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আরওই বিপত্তি বেড়েছে বলে জানা গেছে। আবার, আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানতে পারা গেছে যে, আগামী ৩-৪ দিনে সম্ভবত আবারও বাংলার মানুষকে বৃষ্টির প্রকোপ সহ্য করতে হবে, ২৮ তারিখে কটকের দিকে আসতে থাকা সাইক্লোনই তাঁর কারণ। জানা গেছে, এর প্রভাব পশ্চিমবঙ্গেও দেখা দেবে। ফলত, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, এই বন্যা তাঁদের মনে ২০০৮ সালের বন্যার আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতিতে অধিক থেকে অধিকতর ত্রাণই তাঁদের কাছে বেঁচে থাকার উপায়, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা। (ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত)