সহিষ্ণু ঘোষ : এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং অর্থনিতীতে বড় রদবদল দেখা যায়।
আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান দেশ গুলি এক-এক করে Sanctions বসাতে থাকে রাশিয়ার ওপর। তার পরেই প্রতি ব্যারেল ক্রুড ওয়েলের দাম আকাশ ছোঁয়৷ এবং ভারতও এর থেকে নিস্তার পায়নি,এমনকি শ্রীলঙ্কার মতো ছোটো দেশের অর্থনীতিতেও কি প্রভাব ফেলেছে তা আনরা জানি ।
এমতবস্থায় রাশিয়া আন্তর্জাতিক অনুসারে অনেক সস্তায় ক্রুড ওয়েল ভরতকে প্রস্তাব করে।
এবং আমেরিকার Sanction এর হুমকি এক-কথায় উড়িয়ে দিয়ে কিভাবে এস.জয় শঙ্কর ( minister of foreign affairs) ইউরোপিয়ান মিডিয়াকে জবাব দিয়েছিলেন তাও আমরা দেখেছি। তারপরেই গত কিছু মাসের সমীক্ষা অনুসারে রাশিয়া ভারতের দ্বিতীয় ক্রুড ওয়েল ইমপর্টার দেশ হিসাবে উঠে এসেছে।
আসলেই কি সস্তায় কেনা ক্রুড ওয়েল ইন্ডিয়ার অর্থনীতি কে সাহায্য করছে?
কিছু তত্ত্ব –
১. সাধারণত, ভারতের বাইরের বাণিজ্যের অধিকাংশই মার্কিন ডলারে পরিশোধ করা হয়। কিন্তু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তরফ থেকে রুবেল কারেন্সি তে তেলের জন্য অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয় ।
কিন্তু রুবেলের প্রকৃত বাজার মূল্য অনির্ধারিত। যেহেতু এটি বিশ্বব্যাপী মুদ্রা বাজারে সক্রিয়ভাবে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। তাই, যদি ধরে নেওয়া যায় রাশিয়া ভারত কে একটি ক্রুড ওয়েল প্রতি ব্যারেল 80 ডলারে কেনার প্রস্তাব দেয়। সেই 80 ডলারকে রুবেলে রূপান্তর করতে হবে। কিন্তু রুবেলের অনির্ধারিত সত্যিকারের দামের কারণে কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে ভারত সত্যিই সস্তা দামে রাশিয়ান তেল কিনছে?
২. মুদ্রা বিনিময় নীতি দীর্ঘদিনের জন্য ভালো নয় (মুদ্রা বিনিময় নিতী – ধরুন, রাশিয়া ইন্ডিয়ার থেকে যা কিছু কিনছে সেগুলি রুপি তে পেমেন্ট এর জন্য বলা হল, এবং ইন্ডিয়া রাশিয়ার থেকে যা কিছু কিনছে সেটা রুবেলে পেমেন্ট করার কথা বলা হল) । কারণ দেখা যায় রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানির হার ভারত থেকে রাশিয়ার আমদানি হারের চেয়ে অনেক বেশি। তাই ভারতের জন্য বাণিজ্য অবক্ষয় ঘটতে পারে। রাশিয়া ও ভারতের বাণিজ্যের মধ্যে ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটতে পারে । এছাড়াও ভারত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উপেক্ষা করার ফল ভুগতে পারে ।
আরও পড়ুন: Vikram Vedha Teaser (Hindi) 2022: ‘দুর্দান্ত টিজার!’, রিলিজের পরেই প্রশংসার ঝড় নেট মাধ্যমে
সুভাষ চন্দ্র গর্গ ( former finance secretary) একটি ইন্টার্ভিউ তে বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বানিজ্যে একটা কমন কারেন্সি থাকা অত্যন্ত জরুরি। যা বানিজ্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। হ্যা, আমেরিকান ডলার যেভাবে সিস্টেমে আধিপত্য দেখায় তার বিরুদ্ধে অন্য ভাবে ভাবতে হবে, তা বলে মুদ্রা বিনিময় নিতী কখনই ভালো উপায় নয়। এতে পরে ভারতের সাথে বানিজ্যে আরো বাকি দেশ এক ই নিতী গ্রহন করলে, ভারতের অর্থনিতী অবস্থা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে , এবং রুপিরও পতনের সম্ভাবনা দেখা যেতে পারে ।