বাহক নিউজ় ব্যুরো: তৃণমূলে ফিরেছেন রাজীব ব্যানার্জী। বিধানসভা ভোটের আগে দলবদল করে বিজেপিতে যাওয়ার পরই রাজীবের বিরুদ্ধে বন সহায়ক পদে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন মমতা ব্যানার্জী। দুর্নীতির তদন্তও করা হবে বলেন। রাজীবও উল্টে মমতাকেই দোষারোপ করে বলেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন দপ্তরে তৃণমূলের নেতাদের নিয়োগ করা হয়। রাজীব তৃণমূলে ফিরতেই বিরোধীরা প্রশ্ন করছেন, বন সহায়ক নিয়োগের দুর্নীতির তদন্ত এখন আর হবে তো?
রাজীবের হাওড়াতেই এক জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন রাজীব ‘গদ্দার’। ‘হরিদাস মন্ত্রী’ বলে কটাক্ষও করেছিলেন। সেই রাজীবকে ফের নিতে হল তৃণমূলে, আর এতেই বিরোধীরা প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করছে তৃণমূল নেত্রীকে। নির্বাচন ঘোষণার আগে রাজীবের নাম না করে মমতা বলেছিলেন,‘‘যে ছেলেটা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে, বন সহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে ও কিছু কারসাজি করেছে। আমরা তার তদন্ত করছি। আজ থেকে ৭-৮ দিনের মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে আমরা করতে পারব না। কিন্তু তদন্ত চলবে। কিন্তু এর পরে আপনারা যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের দাবি সত্যি হলে আমরা পুনর্বিবেচনা করব।’’
কলকাতা এবং দুবাই মিলিয়ে রাজীবের অন্তত পাঁচ-ছয়টা বাড়ি আছে বলে জানান তৃণমূল নেত্রী। হাওড়ার ওই কর্মীসভা থেকে মমতা বলেছিলেন, “ডোমজুড়ের কাছে ক্ষমা চাইছি। কারণ, গত বছর এখানে গদ্দারকে প্রার্থী করেছিলাম। গদ্দার জনগণের টাকা মেরেছেন। আমায় বলেছিল, ওকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট দেওয়া হোক। যাতে আরও কমিশন নিতে পারে। সেচ দফতরে দুর্নীতি করে অনেক টাকা করেছে। অভিযোগ আসায় ওকে সেচ দফতর থেকে সরিয়ে দিই। পরে বন দফতর দিই। বুঝতে পারিনি তার ভিতরে এত প্যাঁচ রয়েছে। কলকাতায়, দুবাইয়ে অনেক সম্পত্তি করেছে। যাও মানুষকে জবাব দাও। তারপর ভোট চাও। আগে জানলে ওকে অনেক আগেই সরিয়ে দিতাম। এখন আবার গানের ক্যাসেট বের করছে… সবই নাকি উনি করেছেন! তাহলে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়োজন ছিল না। উনি একটা হরিদাস মন্ত্রী।”
রাজ্য বিজেপির নেতা শমীক ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “বন সহায়ক পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। আসন সংখ্যা প্রথমে ৯০০ থাকলেও পরে ৩ হাজারের বেশি সেখানে নিয়োগ হয়। ১০ লক্ষ আবেদনকারী ছিল। দেড় মাসে ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ইন্টারভিউ নিয়ে তাঁদের নিয়োগ কী ভাবে সম্ভব হল, কোথায় তালিকা তৈরি হল এই প্রশ্ন আমরা তুলেছিলাম। আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসেও এ নজির নেই। হাওড়ার বেশ কিছু গৃহবধূকেও আমরা দেখেছি তাঁরা এখন অরণ্য ভবনে। এটা নিয়ে আমরা তদন্ত চেয়েছিলাম। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন এটা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত চাই। তিনি সম্ভবত একটি তদন্ত কমিটিও করেছেন। এখন আমরা অধীর অপেক্ষায় ওই তদন্ত শেষে হয় কি না তা দেখার জন্য।”
তৃণমূলের অন্দরেই রাজীব দলে আসায় অসন্তোষ আছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “তবে গত ভোটের সময় মমতাদি ডোমজুড়ে প্রচারের গিয়ে যে বলেছিলেন, গড়িয়াহাটে তাঁর ৩-৪ টে বাড়ি আছে, টাকার লেনদেন দুবাইয়ে? তা সত্ত্বেও কেন তাকে দলে নেওয়া হল তা শীর্ষ নেতৃত্বই বলতে পারবেন।”