বাহক নিউজ় ব্যুরো: বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী নিজেকে অন্য বিধায়কদের থেকে আলাদা মনে করেন। ফেসবুকে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে বললেন লোকে তাঁকে অন্য বিধায়কদের মতো ভেবে কলেজে ভর্তির খরচ বা মেয়ের বিয়ের খরচ চাইছে। কিন্তুু তাঁর আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে, ফলে তাঁর পক্ষে আলাদা টাকা খরচ সম্ভব না- এমনটা বোঝাতে আয় ব্যয়ের হিসাব জানালেন বলাগড়ের বিধায়ক।
কোনোকিছু না লুকিয়ে আয়ের হিসাব জানাতে গিয়ে মনোরঞ্জন বলেন, বিধায়ক হিসেবে তাঁর মাসিক ভাতা ২৭ হাজার ৫০০ টাকা। তিনটি স্থায়ী কমিটির সদস্যও হিসেবে তিনি মাসে ষাট হাজার টাকা আয় করেন, এই প্রসঙ্গে বলেন, “মাসে ছ’টি মিটিং হয়। যার চারটেতে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। না হলে পয়সা কাটা যাবে। আর উপস্থিত থাকলে চার পনেরো ষাট হাজার টাকা মিলবে। তা হলে ষাট আর সাতাশ, সর্ব মোট মাইনে হবে সাতাশি হাজার পাঁচশো টাকা।”
তাঁর আয়ের চেয়ে ব্যয় প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা বেশি বলে দাবি করেন তিনি। খরচ প্রসঙ্গে বলেন, “গাড়ির ভাড়া আর সারা দিনের যা তেল পোড়ে, সব মিলিয়ে হাজার দুই। ড্রাইভার নেয় মাসে বারো হাজার আর খাই খরচ ধরে নিন আরও তিন হাজার। সিকিউরিটি দু’জনের খাওয়ার জন্য ধরুন আরও ছয় হাজার। আমার সংসার খরচ ধরুন দিনে পাঁচশো। মাসে পনেরো হাজার। সব মিলিয়ে হয়ে যায় ৯৬ হাজার।” এছাড়াও রয়েছে চা-টিফিনের খরচ। বিধায়কের ডুমুরদহ ও জিরাটের দুই কার্যালয় সামলানোর দায়িত্ব প্রাপ্ত দু’জনকে মাসে ছ’হাজার টাকা করে দেন। মনোরঞ্জনের বলেন, তাঁর মোট মাসিক খরচ হয় এক লাখ ১২ হাজার থেকে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা।
এই বাড়তি খরচের টাকা প্রসঙ্গে মনোরঞ্জন বলেন, “আমি আগে একটা চাকরি করতাম । সেটা ছেড়ে দিয়েছি। পিএফ বাবদ পেয়েছি লাখ চারেক টাকা। সেখান থেকে এনে বাড়তি খরচ করেছি। বইয়ের রয়্যালটি বাবদ বেশ কিছু টাকা আসে।”
এরপর বলাগড়ের বিধায়ক বলেন, তাঁর কাছে এলাকার বিভিন্ন লোক তাঁকে অন্য বিধায়কদের মতো ভেবে আর্থিক বিপদে পড়ে ছুটে আসে। কেউ বিয়ের টাকা, কারুর কলেজে ভর্তির টাকার জন্য বিধায়ককে বলেন। কিন্তুু মনোরঞ্জনের কিছুই করার থাকে না, তিনি নিরূপায় বলে দাবি করেন ফেসবুকে।
খোলাখুলি আয় ব্যয়ের হিসাব দেওয়া প্রসঙ্গে বিরোধীরা অবশ্য খুব একটা সাধুবাদ জানায়নি বলাগড়ের বিধায়ককে। এই প্রসঙ্গে বলাগড়ের দুই নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক অতনু ঘোষ বলেন, “এটাই স্বাভাবিক। উঁনি এই বিষয়গুলোকে এমনভাবে তুলে ধরছেন, যাতে আমিত্ব প্রকাশ পাচ্ছে।” বিজেপির হুগলির যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন, “বলাগড়ের বিধায়ক আসলে বলতে চেয়েছেন, উঁনি নিজে সৎ, বাকি সবাই অসৎ।”