বাহক নিউজ় ব্যুরো : ওঁরা স্বপ্ন দেখত ধর্মহীন সমাজের, তাই নিজেদের যখন সন্তান হল তখন তার জন্ম শংসাপত্রে ধর্ম হিসাবে ‘মানবধর্ম’ উল্লেখ করে আবেদন জানিয়েছিল রানাঘাটের এক দম্পতি। খানিক জটিলতার পর রানাঘাট মহকুমা প্রশাসন ‘মানবধর্ম’কেই স্বীকৃতি দিল।
নদীয়ার রানাঘাটের নিকটবর্তী আঁইসমালির স্বরুপ মুখার্জি ও তাঁর স্ত্রী মৌমিতার সন্তান রানাঘাট সেন্ট্রাল নার্সিংহোমে জন্ম গ্রহণ করে। স্বরূপ ও মৌমিতা দুজনেই বামপন্থী, ওঁরা আগে ওঁদের বিয়েতে সমস্তরকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান বর্জন করেছিলেন। পরিবর্তে রক্তদান, বৃক্ষ রোপন, সম্প্রীতি মূলক লোকগানের আয়োজন করেছিলেন। সন্তান জন্মগ্রহণ করার পর স্বরূপ ও মৌমিতা সিদ্ধান্ত নেই তাদের সন্তানের কোনো ধর্ম থাকবে না, কেবল মানুষ হিসেবেই পরিচিতি পাবে তাদের সন্তান। তাই, রানাঘাট পৌরসভার কাছে আবেদন করেন তাঁদের সদ্যজাত সন্তান ‘সৃজিতে’র ধর্ম হিসেবে তাঁরা “মানবতা” লিখতে চান। আবেদনপত্র হাতে পেয়ে ধন্ধে পড়ে গিয়েছিল রানাঘাট পুরকতৃপক্ষ। কারণ এরকম আবেদন তাদের কাছে আগে আসেনি। তাই স্বভাবতই আপত্তি ছিল তাদের।এরপর বিষয়টি গড়ায় রানাঘাট মহকুমা প্রশাসন পর্যন্ত। অবশেষে নাছোড়বান্দা দম্পতির একরোখা লড়াই জয়ী হল। রানাঘাট পৌরসভা স্বীকৃতি দিল ‘মানবধর্ম’কে।
বাম যুব-নেতা স্বরূপ জানান, তাঁরা চান তাঁদের সন্তান শুধু মানুষ হয়েই বড় হোক। তাঁর কথায়, “আমরা চৈতন্য লালনের জেলার লোক। লালন বলেছিলেন,’এমন মানব সমাজ কবে গো সৃজন হবে,যেদিন হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান জাতি গোত্র নাহি রবে।’ আমরা তো সেই সমাজের স্বপ্ন দেখি, তাই আমি আমার সন্তানকে মানুষ হিসেবেই পরিচিত করতে চাই এই সমাজে।”