বাহক নিউজ ব্যুরো : কোভিড পরবর্তী অসুস্থতা কেড়ে নিল বুদ্ধদেব গুহকে। রবিবার রাত ১১ টা ২৫মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় এই প্রবীণ সাহিত্যিকের। মৃত্যু কালে তার বয়েস হয়েছিল ৮৫বছর। গত বছর এপ্রিল মাসে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। তখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। তারপর করোনা কে জয় করে ৩২দিন পর বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি আসার পর আবার বিভিন্ন রকম অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন তিনি। এবারে আর শেষরক্ষা হয়নি রবিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যু তে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো সাহিত্য জগতে।
সাহিত্য জগতে বুদ্ধদেব গুহ এজন উজ্জ্বল নক্ষত্র।
বুদ্ধদেব গুহর জন্ম ১৯৩৬ সালের ২৯শে জুন কলকাতায়। তিনি পড়াশোনা করেছেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে। এবং পেশায় তিনি ছিলেন চ্যাটার্ড অ্যাকাউনটেড। এ ছাড়াও তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক। ওনার একের পর এক কালজয়ী সৃষ্টি সমৃদ্ধ করেছে বাংলা সাহিত্য জগতকে।
৩২দিন পর তিনি যখন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন তখন তিনি তার অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “আমি এখনো ফুরিয়ে যাব না”। কিন্তু এই মাসেই আবার প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শুধু শ্বাসকষ্টই নয় সঙ্গে ধরা পড়েছিল মুত্রনালীর সংক্রমন, লিভার ও কিডনির সমস্যা। সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির সমস্যাও ছিল তাঁর। মেডিকেল টিম তাঁকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রেখেছিলেন। আবারো তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
তিনি ছিলেন এক বর্ষীয়ান সাহিত্যিক। তাঁর বিখ্যাত লেখাগুলি হলো, ‘বাবলি’, ‘মাধুকরী’, ‘হলুদ বসন্ত’, ‘কুমুদিনী’, ‘খেলা জখন’, ‘জঙ্গলমহল’ ইত্যাদি। ‘হলুদ বসন্ত’ উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৭৬সালে আনন্দ পুরষ্কার পান। বুদ্ধদেব গুহ মানেই ‘ঋজু’ বা ‘ঋভু’র মতো চরিত্র, যা তরুন প্রজন্মের মনে দাগ কেটে যাবে সারাজীবন।
তাঁর প্রয়ানে বাংলা সাহিত্যের একটি যুগের অবসান ঘটলো। তাঁর এই প্রয়ানে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলা সাহিত্য জগৎ থেকে শুরু করে তাঁর অসংখ্য অনুরাগীরা। শোকস্তব্ধ সবাই।