বাহক নিউজ় ব্যুরো : প্রতিবছর সারা বিশ্বে ১৩ই অগস্ট বামহাতি দিবস। বামহাতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক কিছু অজানা তথ্য।
শচীন টেন্ডুলকার, বারাক ওবামা, টম ক্রুজ, আলবার্ট আইনস্টাইন,বব ডিলান, বিল গেটস,অ্যারিস্টটল,লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি এবং মাইকেল অ্যাঞ্জেলো – এবং আরো অনেক বিখ্যাত মানুষ বামহাতি। পৃথিবীর মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ বামহাতি হয়ে থাকেন। বামহাতি, অর্থাৎ তারা দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো বামহাতে করতে স্বছন্দ বোধ করেন। হরমোনজনিত কারণে বা জেনেটিক কারণে কিংবা গর্ভাবস্থায় গর্ভে ভ্রুণের অবস্থানের উপর নির্ভর করে বাম নাকি ডান – কোন হাত বেশি শক্তিশালী হবে। মস্তিষ্কের বাম অংশ থেকে আমাদের কথা বলার দক্ষতা ও শরীরের ডান দিকটা নিয়ন্ত্রণ হয়, ফলে বেশিরভাগ মানুষ ডানহাতি হয়। ১০ শতাংশ মানুষের ভাষা দক্ষতা মস্তিষ্কের ডান দিক থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়, ফলে তারা বামহাতি হয়। মানুষের মতো কথা বলার দক্ষতা অন্য প্রাণীদের না থাকায় তাদের ক্ষেত্রে বামহাতি-ডানহাতির অনুপাত থাকে প্রায় একই।
দৈনন্দিন জীবনে বামহাতিদের কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। যেমন পেনসিল দিয়ে বা দোয়াতের কালি দিয়ে লেখার সময় হাতে কালি লেগে যাওয়ার ব্যাপার থাকে। আর্মিতে বামহাতিদের সমস্যায় পড়তে হয় অস্ত্র ব্যবহার করতে গিয়ে। আধুনিক অস্ত্রতে বুলেটের কার্তুজ বেরোয় অস্ত্রের ডান দিকে, ডানহাতিদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এভাবে অস্ত্র তৈরি হয়। বামহাতিরা এসব অস্ত্র ব্যবহার করলে অস্ত্রের ডানদিক থেকে কার্তুজ বেরিয়ে মুখে এসে লাগে। ফলে সঠিকভাবে সুবিধামতো অস্ত্র চালাতে গেলে আলাদাভাবে অস্ত্রের জন্য আবেদন করতে হয় বামহাতিদের।
কিছু অসুবিধার মতো কিছু সুবিধাও পেয়ে থাকে বামহাতিরা। হাতনির্ভর খেলা যেমন ক্রিকেট, বেসবল, টেনিসের মতো খেলাগুলোতে বামহাতিরা সুবিধা পেয়ে থাকে। ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানের কাছে বল যখন এগিয়ে আসে, তখন বামহাতিদের ক্ষেত্রে বলটিকে দেখা এবং আঘাত করা দুটি কাজই মস্তিষ্কের ডান অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বামহাতিদের মস্তিষ্ক ২০ মিলিসেকেন্ড কম সময় নেয় ডানহাতিদের মস্তিষ্কের তুলনায়। কারণ, ডানহাতিদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ডান অংশ থেকে বাম অংশে সংকেত যেতে সামান্য হলেও সময় বেশি লাগে। অনেক সময় এই মিলিসেকেন্ডের পার্থক্য বড় ভূমিকা পালন করে।
একবিংশ শতাব্দীতে আজও পৃথিবীর পৃথিবীর উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোয় বামহাতিদেরকে অশুভ লক্ষণ বা অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। অনেক ‘শিক্ষিত’ পরিবারের বাবা-মায়েরা জোর করে ছেলে-মেয়েদের ডান হাতে কাজ করাবার জন্য জোর করতে থাকেন, তারা বুঝতে চান বামহাতি হওয়াটা ডানহাতি হওয়ার মতোই স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক।