বাহক নিউজ ব‍্যুরো :  তালিবানি আতঙ্কে দেশ ছাড়তে হয়েছিল মেয়েটিকে। যেতে চেয়েছিল ইংল্যান্ড, কিন্তুু ভাগ্য নিয়ে গেল ডেনমার্কে। ফুটবল পাগল মেয়েটি প্রথমে ক্লাব ফুটবলে, এরপর ডেনমার্কের জাতীয় দলে জায়গা করে নিল। এরপর শুধুই গোলের বন্যা, ৯৮ ম্যাচে ২০০টি আন্তর্জাতিক গোল আছে আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া নাদিয়া নাদিমের।

তালিবানি শাসনকালে নাদিয়ার বাবাকে মেরে ফেলে তালিবানরা।তখন নাদিয়ার বয়েস মাত্র এগারো। আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীতে যুক্ত ছিলেন নাদিয়ার বাবা। পাঁচ বোন ও মায়েরও জীবন সংশয় ছিল, তার আর পাঁচজন রিফিউজির মতো সন্তানদের নিয়ে দেশ ছেড়েছিল নাদিয়ার মা। নকল পাসপোর্টে পাকিস্থান, সেখান থেকে ইটালি, সেখান থেকেই ইংল্যান্ডের যেতে চেয়েছিল নাদিয়ার মা। কিন্তুু ট্রাক থামিয়ে মাঝপথেই নামিয়ে দেওয়া হয় তাদের। ডেনমার্কে থেকেই শুরু হল নাদিয়ার জীবনের লড়াই। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলা শুরু নাদিয়ার। খেলেছেন ম্যানচেস্টার সিটি, পিএসজির মতো বড় ক্লাবেও। পিএসজিকে এনে দিয়েছেন ফ্রেঞ্চ লিগ শিরোপা।

Advertisements
Appy Family Salon AD Banner Use Code to get Discount

নিজের প্যাশনকে টিকিয়ে রাখতে হলে দেশ ছাড়তেই হত নাদিয়াদের। ছোট থেকে নাদিয়া নাদিমের শৈশব কেটেছিল তালিবানি শাসনের ভয়াবহতার মধ্যে দিয়ে। আফগানিস্তানে একজন নারী তালিবানি শাসনে ফুটবল খেলবে- একথা ভাবা যেত না। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে নাদিয়া বলেন, “আফগানিস্তান ছেড়ে আসার শৈশবের ওই দিনগুলোয় একটি জিনিসই ভাবতাম, পরের দিন পর্যন্ত কীভাবে বেঁচে থাকা যায়। পরের দিন সকাল পর্যন্ত আমি কীভাবে বাঁচব। আমি মনে করি এই রিফিউজি শিবিরে থাকা অনেক লোকের ক্ষেত্রেই এমনটা হয়।”

নাদিমের মাঠের বাইরে সাফল্যও অনুপ্রাণিত করার মতো, লিঙ্গ সমতার উন্নয়নে এবং সারা বিশ্বে শরণার্থীদের সাহায্য করার জন্য নাদিয়া বেশি জনপ্রিয়। ১১ টি ভাষায় সাবলীল সে। আরহুস বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জন হওয়ার প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। নাদিয়া বলেন, ” আমি খেলাটা খেলতে ভালোবাসি, কিন্তু আমি জীবনে একটি বড় পার্থক্য গড়তে চাই।”

একদিন নিজে শরণার্থী হয়ে ডেনমার্কে এসেছিল মেয়েটি, প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করেই জীবনের খেলায় জিতে গিয়েছে সে। নাদিয়া আজ অন্য শরণার্থীদের লড়াই করার মন্ত্র শেখাচ্ছে।