বাহক নিউজ় ব্যুরো: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সৌভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে রাখি বন্ধন উৎসব চালু করেছিলেন।এটি তো আমরা সকলেই জানি, কিন্তুু রাখি বন্ধন প্রথা আরো অনেক প্রাচীন। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে হিন্দু ধর্মের নানা কাহিনি। বহু প্রাচীন ইতিহাসে, এমনকি পুরাণে রাখি বন্ধন প্রথার কথা বর্ণিত আছে।
সংস্কৃত শব্দ ‘রক্ষা বন্ধন’ থেকে রাখি বন্ধন কথাটি প্রচলিত হয়েছিল। শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে এর অর্থ, ‘রক্ষা বন্ধন’। রাখি বন্ধনকে মূলত ভাই-বোনের উৎসব হিসেবে দেখা হয়ে থাকলেও আদতে ইতিহাসে এমনটা ছিল না। প্রিয় পুরুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে চেয়ে কাউকে রাখি বেঁধে দিতেন মহিলারা। চিতৌরের রাণী কর্মাবতী গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহের আক্রমণের খবর পেয়ে সম্রাট হুমায়ূনকে রাখি পরিয়েছিলেন। আলেকজান্দারের স্ত্রী, পুরুর হাতে রাখি পরিয়েছিলেন আলেকজান্দারের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায়। পুরাণে আছে, একবার দেবতা ও রাক্ষসদের যুদ্ধে দেবতাদের পরাজয় হতে যাওয়ার সময় ইন্দ্রের স্ত্রী ইন্দ্রের হাতে রাখি বেঁধে দেন, তারপরই যুদ্ধে জয়লাভ করেন দেবতারা। আরো একটি কাহিনী প্রচলিত আছে, বিষ্ণুকে হারিয়ে ত্রিভুবন জয় করেছিলেন বলী। এরপর বিষ্ণুকে নিজের অট্টালিকায় থাকার অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলী। কিন্তুু লক্ষী বলীকে ভাই সম্বোধন করে রাখি পরিয়ে উপহার হিসেবে বিষ্ণুকে চেয়ে নেন।
মহাভারত, রামায়ণেও আছে রাখি বন্ধন প্রথা। মহাভারতে, শিশুপালের ছোড়া চক্রে হাতের আঙুল কেটে রক্ত বের হতে থাকে কৃষ্ণের, তখন শ্রীকৃষ্ণকে শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে হাতে বেঁধে দেন দ্রৌপদী। তখন কৃষ্ণ তাকে সমস্ত বিপদে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দেন। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় ত্রাতার ভূমিকায় ছিল কৃষ্ণ। রামায়ণে দেখা যায় মহর্ষি বাল্মীকি লব-কুশের জন্মের পর তাদের হাতের অগ্রভাগ ও নিম্নভাগে রক্ষা বন্ধন করেন।