বাহক নিউজ় ব্যুরো: বাবা মাল টানার গাড়ি চালাতো। প্রতিদিনের আয় ছিল ৮০ টাকা। মা কাজ করত লোকের বাড়িতে। অভাব থেকে পালাতে চেয়েছিল মেয়েটা, পালাতে গিয়ে হকি খেলার শুরু। পালাতে পালাতে একদিন হয়ে উঠল ভারতীয় হকির ‘রানী’।
দিনে দুবেলা খাবার জোটে না যার, তার কাছে হকি খেলা বিলাসিতা। হকি স্টিক কোথায় পাবে? কোথায় পাবে হকি খেলার অন্যান্য সরঞ্জাম? পুরোনো, ভাঙা একটা স্টিক হাতে নিয়েই সাত বছর বয়েসী রানী রামপালের হকি খেলার শুরু। বাড়ির পাশের হকি অ্যাকাডেমির কোচকে সাহস করে বলে ফেলে সে হকি খেলতে চায়। কোচ বলেন, এত অপুষ্টি নিয়ে হকি খেলা যাবে না, সে শারীরিকভাবে হকি খেলার উপযুক্ত নয়। অবশেষে কোচ রাজি হন, রানীকে হকি খেলার সরঞ্জামও কিনে দেন। অ্যাকাডেমীতে রোজ আনতে হত আধ লিটার দুধ। এত দুধ কোথায় পাবে সে? দুধের সাথে জল মিশিয়ে নিয়ে যেত রানী। বাড়িতে ছিল না ঘড়ি। ভোরের আলো ফুটতেই উঠে খেলতে যেত রানী। হকি খেলতে খেলতেই একদিন উপার্জন করতে শুরু করা। প্রথম রোজগারের ৫০০ টাকা যখন বাবার হাতে দিল হরিয়ানার মেয়েটা, বাবা কেঁদে ফেলল। এত টাকা একসাথে কখনো দেখেনি রানীর বাবা।
মাত্র ১৫ বছর বয়সেই জাতীয় দলে সুযোগ পেল রানী রামপাল। সে ছিল জাতীয় দলের সর্বকালীন সর্বকনিষ্ঠা। দেশকে একের পর এক ট্রফি এনে দেওয়ার পর ২০১৮ সালে এশিয়ান গেমসে রানি ভারতীয় মহিলা হকি দলের অধিনায়ক নির্বাচিত হন। এই টুর্নামেন্টে ভারত রুপো অর্জন করে।ভারত এখন মেয়েদের হকিতে বিশ্বে নবম স্থানে। ১৯৭৮ সালের পর হকিতে এত ভাল পর্যায়ে আর কখনও উঠে আসেনি দেশ। রানী স্বপ্ন দেখেছিল অলিম্পিকে দেশকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যাবে। সে পেরেছে, ৪১ বছর পর ভারত আবার অলিম্পিকের মঞ্চে সেমিফাইনালে পৌছেছে। অভাবকে হারিয়ে ভারতীয় হকির ‘রানী’ রানী রামপালের কাহিনী রুপোলী পর্দার গল্পকেও যেন হার মানায়।
Published on Friday, 6 August 2021, 8:20 pm | Last Updated on Friday, 6 August 2021, 9:01 pm by Bahok Desk









