বাহক নিউজ় ব্যুরো:
পুরোহিত মানেই চোখের সামনে ভাসে কোনো পুরুষ মানুষ মূর্তির সামনে বসে মন্ত্র পড়ছেন। এবার সেই নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে নজির তৈরি করতে চলেছে, কলকাতার বিখ্যাত ৬৬ পল্লীর দুর্গাপুজো। এবছর সেখানে পুজো করবে চারজন মহিলা।
৬৬ পল্লী দুর্গোৎসব প্রতিবছরই আমাদের নতুন কোনো চমক দিয়ে থাকে। এবারের চমকটা একটু অন্যরকম। কারণ, এরকমটা খুব একটা দেখা যায় না। ৬৬ পল্লীর পুজোয় পুরোহিত হিসেবে দেখা যাবে চারজন মহিলাকে। নন্দিনী ভৌমিক, রুমা রায়, সেমন্তী ব্যানার্জি ও পৌলোমী চক্রবর্তী পুজো করবেন। কয়েক শতকের পুরনো প্রথা ভাঙতে চলায় খুশি ৬৬ পল্লীর বাসিন্দারাও। ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পুরাতন সংস্কারের এই আধুনিকীকরণকে স্বাগত জানাচ্ছেন নেটিজেনরাও। ৬৬ পল্লীর অন্যতম কর্মকর্তা প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায় জানান, “বাড়িতে তো মহিলারাই পুজার জোগাড় করেন, যে প্রতিমার পুজো হয় তিনিই তো মহিলা, তাহলে মহিলারা পৌরোহিত্য করতে পারবেন না কেন? আজকাল মহিলা ঢাকিরাও ঢাক বাজাচ্ছেন। আমরা অনেক দিন ধরেই এই নিয়ে ভাবছিলাম। খোঁজখবর নেওয়া শুরু করতে গিয়ে দেখি পশ্চিমবঙ্গে মহিলা পুরোহিতরা আগের থেকে অনেক বেশি সক্রিয়।” প্রদ্যুম্ন বাবু আরো বলেন, “বুদ্ধিটা প্রথম পেলাম উইন্ডোজ প্রোডাকশানের থেকে। এর আগে একবার আমাদের থিম ছিল পুরনো কলকাতা। প্রাক্তন ছবিটিতেও বারবার এসেছিল কলকাতার অনুষঙ্গ। তখনও ওঁরা আমাদের সাহায্য করেছিল। এবারেও অরিত্র মুখার্জীর পরিচালনায় ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ ছবিতে মহিলা পুরোহিতই ছিলেন প্রোটাগনিস্ট। কাজেই উইন্ডোজই যেন আমাদের সূত্রটা ধরিয়ে দেয়।”
অধ্যাপিকা নন্দিনী দেবী তার আরেক সহপাঠিনী রুমা দেবীকে প্রস্তাব দেন বিবাহের পুরোহিত হওয়ার। ‘শুভমস্ত’ নামে পৌরহিত্যের দল গঠন হয়। এভাবেই শুরুটা হয়েছিল। এখন নন্দিনী ভৌমিক, রুমা রায়দের দলে যোগ দিয়েছেন সেমন্তী ব্যানার্জী ও পৌলমী চক্রবর্তী। এভাবে ওঁরা পৌরহিত্য করে আসছেন কয়েক বছর ধরে।
করোনা আবহে অবশ্য বেশি জাঁকজমক চাইছে না ৬৬ পল্লী। দুর্গাপুজো এলাকার মানুষকে এক সুতোয় বেঁধে রাখুক, এটুকুই চাইছে ৬৬ পল্লীর বাসিন্দারা।