বাহক নিউজ় ব্যুরো: কঠিন সময় মানুষকে আরো শক্ত করে। পাকিস্তানের ব্যাটার আসিফ আলি জীবনটা এমনই। ২ বছর বয়সী মেয়েকে হারিয়েছেন ২০১৯ সালে। খেলায় মন বসাতে পারতেন না, বাজে ফর্মের কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র সমালোচনা সহ্য করতেও হয়েছিল। অতীত ভুলে আজ পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ওয়ার্ল্ড কাপ জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন এই ফিনিশার ব্যাটার।
ক্যান্সার কেড়ে নেয় আসিফের মেয়েকে। ২ বছরের ছোট মেয়ের চলে যাওয়ার ধাক্কা আসিফকে ক্রিকেট থেকে ক্রিকেট থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল কিছুদিন। সেই ধাক্কাই আসিফকে মানসিকভাবে শক্ত করে তোলে। হতাশা কাটিয়ে কঠিন পরিস্থিতেতেও তাই ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ শেষ করে আসতে পারছেন আসিফ।
নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর আফগানিস্তান ম্যাচেও প্রয়োজনীয় সময়ে দুর্দান্ত ফিনিশ করেছেন আসিফ আলি। টপ অর্ডার ভালো হলেও একজন ফিনিশারই শেষ দুই-তিন ওভারে ব্যাট চালিয়ে দলকে জিতিয়ে আসেন বা প্রতিপক্ষ দলকে বড় টার্গেট দিতে পারেন। সেই কাজটিই দারুণ ভাবে করছেন আসিফ, তার ফলেই আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে গিয়েছে পাকিস্তানের।
এতটা সহজ ছিল না আসিফের ফিরে আসাটা। মেয়ে মারা যাওয়ার আগে চিকিৎসার জন্য মেয়েকে নিয়ে কখনও লাহোর, কখনও করাচি, কখনও ইসলামাবাদে ছোটাছুটি করতে হয়েছিল। গিয়েছিলেন আমেরিকাতেও। তবু বাঁচানো পারেননি মেয়েকে। পিএসএলে ভালো ব্যাট করলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের খুব একটা ভালো খেলতে পারছিলেন না আসিফ। অবশেষে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন সময়ে চারটি ছয় মেরে একাই ম্যাচ শেষ করে দেন এক ওভার বাকি থাকতেই।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকেন আসিফ। সমালোচনার মুখে পড়া আসিফ আফগানিস্তান ম্যাচের পর বলেছেন, “লোকে আমাকে ৩ ম্যাচে কেন রান পায়নি, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছে। কেন পাইনি, সেটা তারা খতিয়ে দেখেনি। শেষ ওভারে ২-৩ বল খেলার সুযোগ পেয়েছি। কী করে রান পাব? তা সত্ত্বেও দিনের পর দিন সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু আমি ও সবে নজর দিইনি। সেই কারণেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি।”
সংবাদমাধ্যমকে আসিফ আরো বলেন, “শেষ দুটো সিরিজে আমি ৬ নম্বরে ব্যাট করেছিলাম। মিডল অর্ডারে ব্যাট করার জন্য কিন্তু অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়। আমি টিমে কখনও ঢুকি, কখনও বাদ পড়ি। যে পরিস্থিতিতে টিমের দরকার হয়, আমাকে নেওয়া হয়। আর তখন কিন্তু আমি নিজের কাজে ফোকাস করি। আমি নিজের সেরাটা দিতে পারব বলেই নেওয়া হয় টিমে।”