বাহক নিউজ় ব্যুরো: ঋতাভরী চক্রবর্তী, টলিমহলে বেশ জনপ্রিয় নাম। কিছুদিন আগেই তাঁর বিয়ে নিয়ে যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল সে নিয়ে এবার সরাসরি মুখ খুললেন তিনি। সেইসাথে নিজের স্বাস্থ্য, কাজ এবং ভবিষ্যত জীবন নিয়েও কথা বললেন ঋতাভরী।
অ্যাবসেস নামক এক রোগের শিকার হয়েছিলেন ঋতাভরী যার ফলে গত বছর আগস্ট মাসে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। তারপর অল্প যন্ত্রণা ও অস্বস্তি নিয়ে নিজের পরবর্তী ছবি ‘এফআইআর’ এর শুটিং করছিলেন তিনি সেইসাথে চলছিল ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্ণিয়ার কোর্স।
শুটিং ও পড়াশোনার চাপে নিজের শরীরের খেয়াল একদমই রাখতে পারছিলেন না ঋতাভরী যার ফলে ব্যথা বাড়তে থাকে। এরই মাঝে ফের ধরা পড়ে ফিশচুলা। চলতি বছর মার্চ মাসে দ্বিতীয় অপারেশনের পর চিকিৎসকের পরামর্শে ছয় মাসের বিশ্রাম নিতে বাধ্য হন তিনি। নয়তো রোগ ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। তবে দীর্ঘ বিশ্রামের পর এখন অনেকটাই সুস্থ ঋতাভরী।
শারীরিক অসুস্থতা ছাড়াও জিনগতভাবে রেকারেন্ট ডিপ্রেশনের রোগী তিনি। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তাঁর ডিপ্রেশন দেখা দিয়েছিল। এই রোগে মানুষ কিছুদিন ভালো থাকে তো কিছুদিন খারাপ। অস্ত্রোপচারের আগে নিয়মিত ওয়ার্কআউট করতেন ঋতাভরী যার ফলে তাঁর শরীরে তৈরী হত উপযুক্ত সেরাটোনিন, যা অভিনেত্রীকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করেছিল।
কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর ওয়ার্কআউট বন্ধ করে দিতে হয়েছিল একেবারেই তাই শারীরিক কষ্টের চেয়েও মানসিক কষ্ট আরো কাহিল করে দিয়েছিল এই অভিনেত্রীর জীবন। ঠিক এইসময়ই তাঁর পাশে ছিলেন ঋতাভরীর ডাক্তার বন্ধু তথাগত।
ঋতাভরী জানিয়েছেন, এই ভদ্রলোক শুধু তাঁর বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখেননি, প্যানিক অ্যাটাকের কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ঋতাভরীকে নিজের হাতে ওষুধ খাইয়ে দিয়েছেন। ঋতাভরীর আগের বয়ফ্রেন্ড মুম্বাইতে থাকেন। কিন্তু সেইসময় তিনি শারীরিকভাবে ঋতাভরীর কাছে উপস্থিত ছিলেন না, যার দরকার সবচেয়ে বেশি ছিল।
চলতি বছরের গোড়ায় পেশায় মনৈবিদ এই ডাক্তার বন্ধুর ক্লিনিক উদ্বোধনে গিয়েছিলেন ঋতাভরী। সেই সময় তাঁরও গার্লফ্রেন্ড ছিল আর ঋতাভরীর সাথে ছিল ভালো বন্ধুত্ব। রুচি, শিল্পবোধ সবই মিলে গিয়েছিল তাঁদের। এরপর ঋতাভরী অসুস্থ হলে তাঁকে প্রায়ই দেখতে আসতেন তথাগত। এই সময়ই ঋতাভরী অনুভব করতে শুরু করেছিলেন, তিনি কারো ওপর ভরসা করতে পারেন।
একটা সময় বিয়ে ব্যাপারটাতে কোনোরকম বিশ্বাস ছিল না ঋতাভরীর। নিজের বাবা মায়ের বিচ্ছেদ দেখেছেন, আশেপাশের ডহু সম্পর্কও ভাঙতে দেখেছেন তাই বিয়ে করতে ভয় পেতেন তিনি। এছাড়া এর আগে কাউকে দেখে মনে হয়নি সংসার করতে পারবেন। তবে তাঁর মনোবিদ বন্ধু নাকি বলেছেন, তিনি পাশে থাকৃএ বৌ বৌ ফিলিং হয়।
তবে ঋতাভরীর শর্ত তিনি যাকে বিয়ে করবেন তাঁর সাথে বিয়ের আগে কিছুদিন থাকতে চান আর তাই ডিসেম্বরে বাগদান সেরে একসাথে থাকা শুরু করবেন তাঁরা। এবং সব পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আগামী বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠান করে বিয়ে সেরে সল্টলেকের বাড়িতে চলে যাবেন বলে জানান অভিনেত্রী।