রুদালি
ঠুনকো সামাজিক মর্যাদার দর্পণ 'রুদালি'! শোক প্রকাশের নামে শোষণ ও সংঘর্ষের কাহিনীর অপর নাম 'রুদালি', অসম্পূর্ণ জীবনের মধ্যেও অস্তিত্বের পূর্ণতা খুঁজে পাওয়ার গল্প বলে 'রুদালি' ', গ্রাফিক্স: বাহক

Bahok News Bureau: এই কাহিনী শোষণ, সংঘর্ষ ও তার পরেও বেঁচে থাকার লড়াইয়ের, নিম্নবর্গীয় শ্রেনীর মহিলাদের সংঘর্ষময় জীবনের, ঠুনকো সামাজিক মর্যাদার দুরাবস্থার দর্পণ। বাংলার লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী লিখে গেছিলেন এই দুরাবস্থা অবলম্বনে এক কাহিনী, নাম ‘রুদালি’। পরবর্তীকালে, কলকাতার এক প্রসিদ্ধ নাট্যশালা পরিচালক ঊষা গাঙ্গুলি এই ছোটগল্পকে নিজের হাতে নেন এবং নতুনভাবে পেশ করেন ‘নাটক’রূপে। সেই সময়ে এটা বহু প্রশংসিত হয়েছিল এবং আলোচিতও হয়েছিল।

পরবর্তীকালে, ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে এই ছোট গল্পের ওপর ভিত্তি করে হিন্দিভাষী এক চলচ্চিত্র জগতের সামনে আসে, সেটার নামও ‘রুদালি’ (Rudaali) ছিল। এই চলচ্চিত্র ‘৬৬-তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস’-এ ‘বেষ্ট ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ’ চলচ্চিত্র হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু শেষ অব্দি মনোনীত হয়নি।

Advertisements
Appy Family Salon AD Banner Use Code to get Discount

রুদালি
ঠুনকো সামাজিক মর্যাদার দর্পণ ‘রুদালি’! শোক প্রকাশের নামে শোষণ ও সংঘর্ষের কাহিনীর অপর নাম ‘রুদালি’, অসম্পূর্ণ জীবনের মধ্যেও অস্তিত্বের পূর্ণতা খুঁজে পাওয়ার গল্প বলে ‘রুদালি’ ‘, গ্রাফিক্স: বাহক

এই শিরোনাম রাজস্থানের কিছু বিশেষ জায়গায় উচ্চবর্ণের পুরুষদের মৃত্যুতে ডাকা নিম্নবর্ণের অন্তর্গত পেশাদারী বিলাপকারী মেয়েদের প্রসঙ্গে দেওয়া। যারা ‘রুদালি’ নামে পরিচিত। এর অর্থ হল ‘ক্রন্দনকারী মহিলা’, এদের কাজ হল জনসমক্ষে পরিবারের লোকেদের সামাজিক মর্যাদার কারণে শোক প্রকাশ করার অনুমতি না থাকায় তাদের হয়ে দুঃখ প্রকাশ করা, বিলাপ করা।

এই কাহিনী শুরু হয় মূল চরিত্রের ‘পরিত্যক্ত’ হওয়ার মধ্যে দিয়ে। মুখ্য চরিত্র ‘শনিচারি’ এর শনিবারে জন্মের পরেই তার বাবার মৃত্যুর পর সে তাঁর মা দ্বারা পরিত্যক্ত হয় এবং জীবনের চাকা তাকে এমন পথের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়, যেখানে তাঁর প্রাপ্তি কাঁটা ছাড়া আর কিছু হয়নি। সেই সূত্রেই তাকে অপবাদ দিয়ে নাম রাখা হয় ‘শনিচরি’।

তাঁর মা ‘পিউলি’ মেয়ে শনিচারিকে ছেড়ে এক ভ্রাম্যমাণ নাট্যশালার সঙ্গে চলে যায়। পরে, ‘গাঞ্জু’ নামক এক মদোন্মত্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে করে বর্না নামক গ্রামে পাড়ি দেয়। প্রথমে শাশুড়ি মারা যায়, তখন শনিচারি কাঁদেনি। এরপরে এক গ্রামে মেলায় ঘুরতে গিয়ে প্লেগে আক্রান্ত হয়ে গাঞ্জু মারা যায়। শনিচারি তখনও কাঁদেনি। সে তার ছেলে ‘বুধওয়া’কে একলা মানুষ করতে থাকে। পরবর্তীকালে বুধওয়া-ও ছেড়ে চলে যায়। শনিচারি তখনও কাঁদেনি। জীবনের নির্মম পরীক্ষাগুলো তাকে এতটাই অন্তর থেকে নিংড়ে দিয়েছিল যে তার বুকে ঝড় উঠলেও, তার চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু ঝরত না।

রুদালি
ঠুনকো সামাজিক মর্যাদার দর্পণ ‘রুদালি’! শোক প্রকাশের নামে শোষণ ও সংঘর্ষের কাহিনীর অপর নাম ‘রুদালি’, অসম্পূর্ণ জীবনের মধ্যেও অস্তিত্বের পূর্ণতা খুঁজে পাওয়ার গল্প বলে ‘রুদালি’ ‘, গ্রাফিক্স: বাহক

ঘটনাচক্রে, শনিচারির বাড়ি আসে ‘ভিকনি’ নামের এক রুদালি। জমিদার ঠাকুরের মৃত্যু আসন্ন হওয়ায়, কেউ তার মৃত্যুতে নাও কাঁদতে পারে এই ভেবে সে আগে থেকেই ‘রুদালি’ এনে শনিচারির বাড়িতে রাখা করায়। তার সাথে কথোপকথনের মাধ্যমে শনিচারি তার জীবনের সমস্ত ঘটনা, সবার একে একে ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা, তার দৃঢ় থাকার ঘটনা, সারাজীবনে অজস্র খারাপ ঘটনা ঘটার পরেও তার কান্না না পাওয়ার অধ্যায় বর্ণনা করতে থাকে। এককথায় বললে, শনিচারি তার জীবনে প্রথমবার মন খুলে কথা বলার মতো আপন কাউকে পায়। তাদের দুজনের মধ্যে অদৃশ্য ও অদ্ভুত বন্ধন তৈরি হতে শুরু করে।

কিন্তু, কাহিনী শেষে ভিখনি মারা যাওয়ার পরে শনিচারি তার আসল পরিচয় জানতে পারে এবং জীবনে প্রথমবারের মতো কাঁদে। অবশেষে শনিচারির ‘রুদালি’ হওয়ার মধ্যে দিয়ে কাহিনী শেষ হয়। এই কাহিনীর প্রত্যেক সংস্করণই ছিল সমকালীন ভারতবর্ষের নারীবাদী স্পর্শে রঞ্জিত, এক অন্য ধরণের তুলি দিয়ে অন্য দৃষ্টিতে অঙ্কিত।

The Great Mosque of Djenne: শিয়া মাখনের প্রলেপ দিয়ে মোড়া আফ্রিকার এই বিশালাকার মসজিদ, রাতভর ধুমধাম করে নাচে-গানে পালিত হয় উৎসব, জানুন ‘দ্য গ্রেট মস্ক’ সম্পর্কে বিস্তারে, পর্ব-১

 

Kalipuja: কবে, কীভাবে বঙ্গদেশে শুরু হলো কালীপুজো? কেন এই কালীপুজো দীপান্বিতা অমাবস্যায় করা হয়? রইলো মা কালীকে ঘিরে থাকা এমনই কিছু অজানা কথা

 

 

‘Toilet’- ek ‘Pressure’ Katha: বাঙালির কীর্তিতে ট্রেনে ‘শৌচাগার’, ভারতীয় রেলে ‘টয়লেট’র ইতিহাস, টয়লেট সৃষ্টি- পর্ব ১

 

 

Digha-John Frank Snaith : ‘আজকের দীঘা’ কার স্পর্শে হয়ে উঠেছিল জীবন্ত?, দীঘার কথা ইতিহাসের পাতায়- দ্বিতীয় পর্ব

 

পড়ুন: বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩

পড়ুন: বাহক শারদীয়া সংখ্যা / পুজো ম্যাগাজিন ১৪২৯ 

PDF টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন – বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩

ঈদ সংখ্যা কেমন লাগলো, ফেসবুক পেজ ছাড়াও নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আপনার নাম দিয়ে মতামত দিতে পারেন।

 

 

 

এছাড়াও আমাদের পূর্বে প্রকাশিত কিছু সংখ্যা সমূহের Pdf নিচে দেওয়া হল।

[PDF] বাহক শারদীয়া সংখ্যা (১৪২৮)

[PDF] বাহক শারদীয়া সংখ্যা / পুজো ম্যাগাজিন (১৪২৯)