করোনা অতিমারির কারণে বিগত বছর থেকেই সাধারণ মানুষের জীবন প্রভাবিত হয়েছে। যদিও টিকা আসার পরে মানুষ অনেকটা স্বস্তি পেয়েছে। তবুও করোনার সংক্রমণ যতদিন না পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক অবস্থা আগের মতোই স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন বাইরে বেরোলেই আমাদেরকে মাস্ক পরতে হবে, আমাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য। উল্লেখ্য, মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের মাস্ক বাজারে এসেছে। এগুলোর মধ্যে কোনওটা খুবই সাধারণ আবার কোনোটা উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন। এদিকে, সমস্ত রকমের প্রস্তুতির পরেও, অনেক মানুষেরই টিকা নেওয়া হয়ে গেলেও করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউকে নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত। এই পরিস্থিতিতে ফেস মাস্ক এবং করোনা সম্পর্কিত বিধিনিষেধ মেনে চলা খুবই প্রয়োজন।
এমআইটি অর্থাৎ মেসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ওয়াইজ় ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজি ইন্সপায়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এমন এক ধরনের ফেস মাস্ক তৈরি হয়েছে, যেটা ব্যবহারকারীকে করোনা সংক্রমণ সম্পর্কে অবগত করবে। উল্লেখ্য, ওই ফেস মাস্কগুলোতে বায়োসেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। এই বায়োসেন্সরগুলো প্রশ্বাস নেওয়ার সময়ে কোভিড-১৯-এর অস্তিত্ব সম্পর্কে জানান দেবে।
গবেষণাপত্রের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে যে, ওই মাস্কটিতে বায়ো মলিকিউলের উপস্থিতি যাচাই-এর জন্য সিনথেটিক বায়োলজি সেন্সরও রয়েছে। এই গবেষণার ব্যাপারটি বায়োটেকনোলজি জার্নালেও প্রকাশিত হয়েছে। এই বায়োসেন্সর মাস্ক কে.এন.-৯৫ ফেস মাস্ক-এর আদলে তৈরি করা হয়েছে। এই মাস্কের মাধ্যমে মাত্র ৯০ মিনিটেই জানতে পারা যাবে যে, কোন ব্যক্তির প্রশ্বাস এর মধ্যে করোনা ভাইরাস উপস্থিত ছিল কিনা। উল্লেখ্য, এই মাস্কে কিন্তু সেন্সর সর্বদাই সক্রিয় থাকে না। কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতির পরীক্ষা করার সময়ে তখনই একটি বাটন-এর মাধ্যমে বায়োসেন্সরকে সক্রিয় করতে হবে। এরপরে, রিডআউট স্ট্রিপের মাধ্যমে মাত্র ৯০ মিনিটে ফলাফল পাওয়া যাবে। এও দাবি করা হয়েছে যে, এর ফলাফল আরটি-পিসিআর পরীক্ষার সমান নির্ভুল।
ওয়াইজ় ইনস্টিটিউটের গবেষক এবং গবেষণায় অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানী পিটার গুয়েন জানিয়েছেন যে, এই মাস্কে গোটা একটা ল্যাবকে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মাস্কে ব্যবহৃত সিনথেটিক বায়োলজি সেন্সর আকারে খুবই ছোট। উল্লেখ্য, এই সেন্সরের ব্যবহার অন্য মাস্কেও করা যেতে পারে। এই সেন্সর করোনা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য ভাইরাস ও ব্যাকটিরিয়াকেও শনাক্ত করতে পারবে। বর্তমানে, এই মাস্কের আবিষ্কর্তারা বহুল পরিমাণে তৈরি করার জন্য বিনিয়োগকারীর খোঁজ করছে।