বাহক নিউজ় ব্যুরো: বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ তথা ‘গ্যানিমিড’-এর চারিদিকে দেখতে পাওয়া গেল জলীয় বাষ্প। এমনটাই দাবি করা হয়েছে হাবস স্পেস টেলিস্কোপের তরফে। উল্লেখ্য, উপগ্রহ ‘গ্যানিমিড’ সৌরজগতের সমস্ত উপগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে বড়ো উপগ্রহ। এই ধরণের জলীয় বাষ্প তখন তৈরি হয়, যখন বরফে ঢাকা গ্যানিমিডের উপরিপৃষ্ঠ ‘সাবলিমেশন’ পদ্ধতিতে কঠিন পদার্থ থেকে গ্যাসীয় পদার্থে রূপান্তরিত হয়।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জলীয় বাষ্পের ব্যাপারটি তখন আবিষ্কার করেন, যখন তাঁরা হাবল-এর কিছু নতুন ও কিছু সংরক্ষিত তথ্যাদি নিয়ে গবেষণা করছিলেন। উল্লেখ্য, ওই জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের করা গবেষণা জুলাই মাসেই চলতি সপ্তাহে সোমবারে ‘নেচার ইকোনমি’ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

Advertisements
Appy Family Salon AD Banner Use Code to get Discount

গ্যানিমিডের ওপর করা কিছু পুরনো গবেষণা থেকে জানতে পারা গেছে যে, গ্যানিমিডে উপস্থিত জলের পরিমাণ পৃথিবী মোট জলভাগের জলভাগের থেকে অনেক বেশি, যদিও আকারে ওই উপগ্রহ পৃথিবীর তুলনায় ২.৪ গুন ছোট। উল্লেখ্য, গ্যানিমিড সৌরজগতের আকারের নিরিখে নবম স্থানে রয়েছে।

উষ্ণতার নিরিখে গ্যানিমিড-এর তাপমাত্রা খুবই ঠাণ্ডা। এমনকি, কখনও কখনও এই উপগ্রহের তাপমাত্রা -৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (-১৮৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত পৌঁছে যায়। যার ফলে, গ্যানিমিডের উপরিপৃষ্ঠ জমে বরফে পরিণত হয়ে যায়। বরফে আচ্ছাদিত এই উপরিপৃষ্ঠের নীচে ১০০ মাইল (১৬১ কিলোমিটার) এলাকা পর্যন্ত নোনতা জলের সমুদ্র অবস্থিত। এবার, বিজ্ঞানীরা এটা ইতিমধ্যে জানেন যে, কোনওভাবেই সমুদ্রের জল বরফের মধ্যে দিয়ে জলীয়বাষ্পে পরিণত হতে পারবে না।

উল্লেখ্য, গ্যানিমিড-ই একমাত্র উপগ্রহ যার নিজস্ব চৌম্বকীয় ক্ষেত্র রয়েছে। যে কারণে, গ্যানিমিডের উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে অরোরা জ্বলজ্বল করতে দেখা যায়। ১৯৯৮ সালে হাবল সর্বপ্রথম গ্যানিমিডের অতিবেগুনী ছবি ক্যামেরাবন্দী করে। এই ছবিতে গ্যানিমিডের জ্বলজ্বল করতে থাকা অরোরা দেখতে পাওয়া গেছে।

গ্যানিমিডের উপরিপৃষ্ঠের তাপমাত্রা দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়। ওই উপগ্রহেরই সময় অনুযায়ী, দুপুর নাগাদ তাপমাত্রা বেড়ে যায়, খুব বেশি না বাড়লেও, তা বরফের স্তর ‘সাবলিমেট’ হওয়ার জন্য অথবা অল্পমাত্রায় জলবিন্দু ছাড়ার জন্য যথেষ্ট। উল্লেখ্য, গ্যানিমিডের বরফ পাথরের মতোই শক্ত। তা সত্ত্বেও, সূর্যের আলোই ওই পাথর স্বরূপ বরফ ক্ষয় হওয়ার জন্য তথা গলিত হওয়ার জন্য যথেষ্ট।