বাহক নিউজ় ব্যুরো: সংসারে বিবাদের কারনে নিজের তিন বছরের সন্তানকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে মারার চেষ্টা করলেন মা।
এমনই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার চাঁদখালি গ্রামে। ওই গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতা আচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নিজের ছেলেকে পুড়িয়ে মারার। কিন্তু এই কাজ করার পর রেহাই পাননি তিনি। গ্রামবাসিরা পাকড়াও করে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এমন কি শিশুটির বাবাকেউ আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, চাঁদখালি গ্রামের ওই গৃহবধূর বিরুদ্ধে অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং শিশুটির বাবা দেবাশিস আচার্যকেউ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই জখম শিশুটি এখন ক্যানিং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে চাঁদখালি গ্রামের বাসিন্দা দেবাশিস আচার্যের সাথে অর্পিতার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পরিবারের সবার সাথেই অশান্তি লেগেই থাকতো অর্পিতার। ছোট খাটো জিনিস নিয়েই ঝামেলা লেগেই থাকতো অর্পিতা সাথে তার শশুর – শাশুড়ী ও স্বামীর। মাঝে মাঝে মারধোর ও হতো। এই বিষয়ে অনেকবার গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও মহিলা সমিতির সদস্যরা এই বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান হয়নি। উপরন্তু দিন দিন অশান্তি বাড়তেই থা কে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার সময় শশুর, শাশুড়ী ও স্বামীর সঙ্গে অর্পিতার ঝামেলা ভীষণ ভাবে বেড়ে যায়। আর তারপরই ভীষণ রেগে যায় অর্পিতা। আর তাঁর সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে তাঁর নিজের ছোট্টো ছেলের উপর। তখনই তিনি শিশুটিকে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ কিরে দেন। তারপর গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়া শুরু করেন। তখন বাচ্চা ছেলেটি যন্ত্রণায় চিৎকার করতে শুরু করে। শিশুটির চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা সঙ্গে সঙ্গে দেবাশিসের বাড়িতে ছুটে যায়।
কিন্তু অনেক ডাকা ডাকির পরও অর্পিতা দরজা না খোলায় প্রতিবেশিরা স্থানীয় মহিলা সমিতিতে খবর দেন। তারপর মহিলা সমিতির সদস্যরা দেবাশিসের বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে শিশুটকে উদ্ধার করেন। তক্ষনে প্রায় শরীরের অর্ধেক অংশ পুড়ে গিয়েছে শিশুটির।
মহিলা সমিতির সদস্যরা তৎক্ষনাৎ শিশুটিকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান। শিশুটি এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। তারপর মহিলা সমিতির সদস্যরাই অর্পিতার বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় নিজের ৩ বছরের ছেলে কে পুরিয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অঅভিযুক্ত অর্পিতা ও তার স্বামী দেবাশিস কে গ্রেপ্তার করেন। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই ঘটনায় অর্পিতার স্বামী দেবাশিসের কোনো হাত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।