
Table of Contents
Bahok News Bureau: পশ্চিম এশিয়ায় ইজ়রায়েল-হামাসের লড়াইয়ের আবহেই নতুন মোড় নিল আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ সুদানের দারফুরের(Darfur) গৃহযুদ্ধ। ছ’মাসের রক্তাক্ত লড়াইয়ের পরে সে দেশের সেনা বাহিনীকে হটিয়ে আধা সামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ ( RSF) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ দারফুরের দখল নিতে চলেছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি।
সেনা-আধাসেনার লড়াইয়ে সুদানে সৃষ্ট সমস্যা
সেনা-আধাসেনার লড়াইয়ে সুদান যেন নরককুণ্ড! আট মাস ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে উলুখাগড়ার মতো প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। অন্য দিকে, সুদান সেনাকে সহায়তা করছে মিশর এই ইউক্রেন। দারফুরের (Darfur) লড়াইয়ে সুদান সেনা কোণঠাসা হয়ে পড়ায় পশ্চিমাঞ্চলের ওই প্রদেশ থেকে লক্ষাধিক অসামরিক নাগরিক পালাতে শুরু করেছেন বলে প্রকাশিত সংবাদে জানানো হয়েছে। রাজধানী খারতুমে এখনও দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলছে। সেদেশের সেনাবাহিনীকে কোণঠাসা করে গুরুত্বপূর্ণ দারফুর প্রদেশের দখল নিতে চলেছে আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (RSF) বলে খবর।
সুদানে (Sudan) ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল- আবদেল আল ফতা আল বুরহান ও জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালো। প্রথম জন সুদানের সেনাপ্রধান এবং ২০১৯ থেকে দেশের সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থার জন্য ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলের প্রধান। দ্বিতীয় জন দেশের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (RSF)-এর প্রধান তথা কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। দুজন জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে। এই লড়াইয়ে যুযুধান দুই পক্ষের কেউই সংঘর্ষবিরতি মানছে না।
দারফুরের বর্তমান অবস্থার নৃশংসতা
রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে গত কয়েক দিনে পশ্চিমের দারফুর(Darfur) প্রদেশে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন। রাজধানী খারতুমেও প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। বিবিসি সূত্রে খবর, আফ্রিকার দেশটিতে চলা এই গৃহযুদ্ধের জেরে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে অন্তত ৬০ লক্ষ মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই পড়শি দেশ চাদে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে, দারফুরে গণহত্যা চালাচ্ছে ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ ও তাদের সঙ্গী আরব মিলিশিয়াগুলো। অমুসলিমদের নিশানা করছে তারা। ধর্ষণকে যুদ্ধের হাতিয়ারের মতো ব্যবহার করছে তারা। পশ্চিম দারফুরের রাজধানী এল জেনেইনায় ফৌজের সদরদপ্তর দখল করে নিয়েছে আধাসেনা। একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে ৮০০ জনকে হত্যা করেছে আরএসএফ।
জাতিসংঘ, স্বাধীন গবেষক এবং দাতব্য সংস্থা সকলেই একটি সংঘাতের নৃশংসতা তুলে ধরেছে যা গত সাত মাসে ৯,০০০ মানুষ মারা গেছে এবং ৫.৬ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ঘোড়া, উট এবং মোটরবাইকে চড়ে আধাসামরিক বাহিনী নভেম্বরের প্রথম দিকে আর্দামাতার উপকণ্ঠে পৌঁছেছিল। সুদানের র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) যোদ্ধারা বাড়ি থেকে পুরুষদের ধরে নিয়ে যায় এবং তারা পুড়িয়ে দেয়। কমপক্ষে ৮০০ জন নিহত হয়েছিল এবং জীবিতদের মৃতদের কবর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং লিবিয়ার পাশাপাশি আরএসএফ-কে রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনারও সহায়তা করেছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি।
দারফুর লড়াইয়ের সৃষ্টি কিভাবে?
২০০৩ সালে তৎকালীন অখণ্ড সুদানের মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। এর পর আরব মুসলিম প্রধান সুদান ভেঙে সৃষ্টি হয়েছিল খ্রিস্টান দেশ দক্ষিণ সুদান। কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা হামদকের নেতৃত্বাধীন সেই অন্তর্বর্তী সরকারকেও উৎখাত করেন সেনাপ্রধান বুরহান। এর পর তিনি ২০২৩ সালে নির্বাচন ঘোষণা করেন। অর্থাৎ, এ বছরই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে জেনারেল বুরহান সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ-কে এক ছাতার তলায় আনতে উদ্যোগী হতেই দাগালোর সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়েছিল। এপ্রিল মাসের মধ্যপর্বে যা গড়ায় রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধে।
৪০ বছর বয়সী আরদামাতার বাসিন্দা ইব্রাহিম আবাকর (তার আসল নাম নয়) বলেছেন,
“আমার আশেপাশে যাদের সাথে দেখা হয়েছে তাদের প্রত্যেককে তারা হত্যা করেছে। আমি প্রার্থনা করছিলাম যখন আমি একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেলাম। একটি শেল আমার বন্ধুদের মেরে ফেলে এবং প্রায় আমার পা কেটে ফেলে।” শাট্টা বলেছেন যে লোকেরা জল পেতে লড়াই করছে, ওষুধ ফুরিয়ে যাচ্ছে এবং শহরের চারপাশে চেকপয়েন্টগুলি রোগীদের এবং চিকিত্সা কর্মীদের স্বাস্থ্য সুবিধাগুলিতে যাতায়াত করা কঠিন করে তোলে। তিনি বলেছেন, “এল ফাশার ভূতের শহরের মতো হয়ে গেছে। আপনি শহরের এমন কিছু অংশ দেখেন যেখানে আপনি কাউকে দেখতে পান না। এটা এত শান্ত যে আপনি আপনার নিজের নিঃশ্বাস শুনতে পারেন,”
রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল সুদানের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাশিফ শফিক বলেছেন,
তিনি ভারী কামান এবং বিমান হামলার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। “আমরা এখনও এর মতো সহিংসতা দেখিনি … পূর্ববর্তী সংঘাতের ফলে ইতিমধ্যেই এল ফাশারে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই বৃদ্ধি পরিবারগুলিকে, বিশেষ করে নারী ও শিশুদেরকে আবার উপড়ে ফেলতে এবং প্রতিবেশী রাজ্য এবং দেশগুলিতে, যেমন চাদের দিকে পালাতে বাধ্য করছে৷ এই অবস্থানগুলি ইতিমধ্যে নিরাপত্তা খুঁজতে আগত শরণার্থীদের সংখ্যার সাথে মানিয়ে নিতে অক্ষম।”
ওবামা উল্লেখ করেছেন, এল ফাশার ইতিমধ্যে দারফুরের অন্যান্য অংশ থেকে বাস্তুচ্যুতদের অনেককে নিয়ে গেছে। দারফুর(Darfur) বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে দুটি – যারা এখনও পর্যন্ত লড়াইয়ের বাইরে থেকেছে – সপ্তাহান্তে যারা বলেছিল যে ত RSF-এর বিরুদ্ধে SAF-এর সাথে বাহিনীতে যোগ দেবে৷ ওবামা বলেন, “যদি এল ফাশারে পূর্ণ যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে আমি মনে করি না কোনো বেসামরিক মানুষ বেঁচে থাকবে।”
আরও পড়ুন: ICC U19 World Cup : অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দায়িত্ব হাতছাড়া শ্রীলঙ্কার? জেনে নিন বিস্তারে
পড়ুন: বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩
পড়ুন: বাহক শারদীয়া সংখ্যা / পুজো ম্যাগাজিন ১৪২৯
PDF টি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন – বাহক ঈদ সংখ্যা ২০২৩
ঈদ সংখ্যা কেমন লাগলো, ফেসবুক পেজ ছাড়াও নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আপনার নাম দিয়ে মতামত দিতে পারেন।
এছাড়াও আমাদের পূর্বে প্রকাশিত কিছু সংখ্যা সমূহের Pdf নিচে দেওয়া হল।