বাহক নিউজ় ব্যুরো: কাল মহালয়ার পূণ্য তিথিতে সূচনা হল দেবীপক্ষের। আকাশে বাতাসে গুঞ্জন ‘মা আসছেন’। আর পুজো মানেই নতুন জামা, অনাবিল আনন্দ।কিন্তু এই নতুন জামার আনন্দ সকলের ভাগ্যে জোটে না। পথশিশুদের সেই আনন্দ অধরাই রয়ে যায়। তবে ফেসবুকীয় গ্রুপ ইকির মিকির কিছু পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে অগ্রণী হয়েছে।
আজ থেকে চার বছর আগে অরিজিৎ দাস ফেসবুকের মাধ্যমেই পরিচিত কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে শুরু করে ‘ইকির মিকির’। তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা। সেই থেকে পথচলা শুরু। গত তিনবছর ধরেই পূজোর আগে প্রোজেক্ট “ঢ্যাংকুড়াকুড়”-নামে দুঃস্থ শিশুদের জামা কাপড় সহ , পড়াশোনার সামগ্রী এবং শুকনো খাবার বিতরণ করে আসছে ইকির মিকিরের সদস্যরা।
তবে শুধুমাত্র প্রোজেক্ট “ঢ্যাংকুড়াকুড়” নয়, গত তিনবছরে বিভিন্ন সময়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য বিভিন্ন কাজ করেছেন তাঁরা। গ্রুপের কর্ণধার অরিজিৎ দাসের কথায়”পুজোয় নতুন জামা হয়তো ওদের অনেকেরই হয়না। নিজে যখন নতুন জামা গায়ে তুলি মনটা কেমন খচখচ করে। তাই সবাই মিলে নিজেদের হাতখরচের কিছুটা ওদের জন্য খরচ করি। আসলে গন্তব্য এটা নয়, এই কাজগুলো বরং একেকটা মাইলফলক বলা যেতে পারে। ইকির মিকিরের আসল উদ্দেশ্য শৈশবকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো, লক্ষ্য এমন একটা স্কুল তৈরী করা, যেখানে পড়ানো নয়, শেখানো হবে। পথে পড়ে থাকা শিশুদেরও মেধা থাকে, প্রতিভা থাকে, যদি ঘষামাজা করা যায় তাহলে একটা চকচকে প্রজন্ম তৈরী হবে, দেশ তৈরী হবে। তাই তো ইকির মিকিরের ট্যাগ লাইন – “নব শৈশব গড়ি, এসো পথের পাঁচালী পথে নেমেই পড়ি। ” তবে তারজন্য দরকার প্রচুর মানুষের সাহায্য, এই যে প্রোজেক্ট ঢ্যাংকুড়াকুর, রুটি দিবস, প্রোজেক্ট হাট্টিমাটিম, এগুলো সবই মানবশৃঙ্খল গড়ে তুলতে সাহায্য করে, সাথে ওই বাচ্চাগুলোর মুখের হাসি তো আমাদের উপরি পাওনা।”
ইকির মিকিরের আরেক অ্যাডমিন রাজীব রায় এর বক্তব্য “ইকির মিকির শুধুমাত্র একটি ফেসবুক গ্রুপ নয়, আমরা এখন একটা পরিবার। আজ ইকির মিকির যতটুকু কাজ করতে পারছে তাঁর পেছনে এই গ্রুপের সদস্যদের অবদান সবচেয়ে বেশী। শুধুমাত্র আমাদের বিশ্বাস করে মানুষ এগিয়ে আসেন , অর্থসাহায্য করেন। তাঁদের জন্যই আমরা ছোটো ছোটো শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে সক্ষম হই প্রতিবার। তবে আমাদের লক্ষ্য আরো অনেক বড়ো, আশা করছি আমাদের চলার পথে আরো মানুষদের সাথে পাবো।”
আরও পড়ুন – দিলীপকে দিতে চেয়েছিলেন বর্ণ পরিচয়, দিদির সামনে গাইতে গিয়ে বাবুল ভুললেন আস্ত একটা স্তবক
এবছর রাসবিহারী মোড়ের গুরুদুয়ারা-র পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় পঞ্চাশজন শিশুকে বস্ত্র সাথে পড়াশোনার সামগ্রী ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন ইকির মিকিরের সদস্যরা।