বাহক নিউজ় ব্যুরো: প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের একটি আন্তর্জাতিক দল একটি পরবর্তী প্রজন্মের স্যাটেলাইটের সংযুক্তিকরণ শেষ করলেন। এই স্যাটেলাইট প্রথম পৃথিবীপৃষ্ঠের জলের সমীক্ষা চালাবে এবং সমুদ্রস্রোত সম্পর্কে গবেষণা করবে। ২০২২ সালের নভেম্বরে সারফেস ওয়াটার এন্ড ওশান টপোগ্রাফি মিশন উৎক্ষেপণ করা হবে।
বর্তমানে এই মহাকাশযানের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে। নাসার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। SWOT হল নাসা এবং ফরাসি মহাকাশ সংস্থা সেন্টার National d’Etudes Spatiales (CNES), কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং ইউকে স্পেস এজেন্সির যৌথ সংস্থা। SUV আকারের স্যাটেলাইট পৃথিবীর লবণযুক্ত এবং মিষ্টি জল সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করবে। গবেষণা চালাবে মহাসাগর,হ্রদ এবং নদীসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে । এর মাধ্যমে সারাবিশ্বে জলের আয়তন এবং অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন গবেষকরা।
এছাড়াও গ্রহের জলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরিমাপ করতে সাহায্য করবে SWOT । কিভাবে,কোন প্রক্রিয়ায় ঘূর্ণায়মান সমুদ্রস্রোত বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর মত অতিরিক্ত তাপ ,আদ্রতা ,এবং গ্রীন হাউজ গ্যাস শোষণ করে তাও জানাবে। এই মিশন গ্রহের বিভিন্ন নদী, হ্রদ এবং জলাধারগুলিতে কতটা জল প্রবাহিত হয় এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের আঞ্চলিক পরিবর্তন কিভাবে হয় তা অনুসরণ করতে সহায়তা করবে।
ওয়াশিংটনের নাসার সদর দপ্তরে SWOT প্রোগ্রাম বিজ্ঞানী নাদিয়া ভিনগ্রাডোভা শিফার জানিয়েছেন, ” আমাদের কাছে এখন ভূপৃষ্ঠের যে সমস্ত জল আছে সেই জল কিভাবে গ্রহের চারপাশে ঘোরাফেরা করে এবং একটি নতুন জলবায়ুতে এটি কীভাবে পরিবর্তিত হতে পারে তা পর্যালোচনা করাই আমাদের প্রথম কাজ।”
গত জুন মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এজেন্সির জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি থেকে স্যাটেলাইট এর বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছিল। সেই থেকে , এই দল মহাকাশযানের অংশটিকে স্যাটেলাইট এর সাথে সংযুক্ত করতে এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ করে সঠিকভাবে কাজ করে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
আগামী ছয় মাসে এই স্যাটেলাইটকে তিনটি পরীক্ষার মাধ্যমে যেতে হবে । যেখানে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং মহাকাশের কঠোর পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে কিনা তা নিশ্চিত করতে একাধিক পরীক্ষা করা হবে। প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদরা স্যাটেলাইটিকে ‘শেক টেবিল’ নামক একটি ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত করবেন, যা উৎক্ষেপণের তীব্র কম্পন এবং উচ্চ শব্দের মধ্যে এই স্যাটেলাইট কতটা কার্যকরী তা দেখবে। এরপর মহাকাশযানটিকে ব্লাস্টঅফ এর মত উচ্চ ডেসিবেল শব্দের সাথে জুড়ে পরীক্ষা চালানো হবে।
এছাড়াও পরীক্ষা হবে তাপমাত্রার ।অবশেষে প্রকৌশলীরা উপগ্রহটির সিস্টেমগুলি মহাকাশযানের বিভিন্ন অংশ এবং অন্যান্য উপগ্রহ থেকে সংকেত সহ যেকোন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তথ্য আদান-প্রদান যোগ্য কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য অতিরিক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে স্থাপন করবেন ।এরপর মহাকাশযানকে উৎক্ষেপণ স্থলে পাঠানো হবে।