বাহক নিউজ় ব্যুরো: বিশ্বের অনেক দেশেই স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসিদ্ধ । কলম্বিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন , নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ডের মতো দেশে ‘ইথানেশিয়া’ অর্থাৎ নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু আগেই বৈধ করা হয়েছিল ‘জীবন সমাপ্তি পছন্দ’ আইন হিসেবে।
তবে এই সমস্ত দেশে মৃত্যুর ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত বিভিন্ন শর্তাবলী রয়েছে এবার নিউজিল্যান্ডেও একই ধরনের শর্তাবলী রেখে ‘ইথানেশিয়া’ আইন আজ ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে কেবল মাত্র সেই সমস্ত লোক যারা ভয়ংকরভাবে মারণরোগে ভুগছেন শুধু তাদের নিজের ইচ্ছায় মারা যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে অর্থাৎ এমন একটি রোগ যা পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জীবন শেষ করে দেয়।
এর পাশাপাশি এই পদ্ধতির জন্য কমপক্ষে দুইজন ডাক্তারের সম্মতি বাধ্যতামূলক। এই আইনটি বাস্তবায়নের জন্য নিউজিল্যান্ডে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে ৬৫ শতাংশের বেশি মানুষ ‘ইথানেশিয়া’-র পক্ষে ভোট দিয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরে নিউজিল্যান্ডে এই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে এবং অবশেষে আজ সকাল থেকে আইনটি কার্যকর করা হয়েছে।
অবশ্য শুনতে কিছুটা অদ্ভুত শোনালেও কিছু মানুষের জন্য এটা স্বস্তির খবর। ৬১ বছরের স্টুয়ার্ড আর্মন প্রোস্টেট ক্যান্সারে ভুগছেন, যার নিরাময়যোগ্য নয়। আর্মন বলেছেন তিনি কীভাবে মারা যাবেন তা নিয়ে তিনি আর চিন্তিত নন। কারণ মৃত্যু কামনায় আর কোন কষ্ট থাকবে না।
তবে নিউজিল্যান্ডের অনেকেই এর বিরোধিতা করছেন । তারা বলছেন ‘ইথানেশিয়া’ মানুষের জীবন ও মূল্যবোধের প্রতি সমাজের সম্মানকে দুর্বল করে দেবে। এটি দুর্বল ব্যক্তিদের প্রতি যত্ন কমিয়ে দেবে বিশেষ করে যারা প্রতিবন্ধী বা যারা জীবনের শেষ দিনগুলোতে বসবাস করছেন। অথচ যারা এই আইনকে সমর্থন করেন তারা বলছেন মানুষের অধিকার আছে সে কখন এবং কিভাবে মরতে চায়। এমতাবস্থায় ‘ইথানেশিয়া’ তাদের মর্যাদার সঙ্গে মরার অধিকার দেয়।
বিদেশ থেকে অনুরূপ মামলা বিশ্লেষণ করার পর নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছেন যে প্রতিবছর সাড়ে ৯৫০ জন এরজন্য জন্য আবেদন করতে পারবেন যার মধ্যে ৩৫০ জনকে মারা যেতে সহায়তা করা হবে। কিন্তু আসলে কতজন আবেদন করেন সে সম্পর্কে এখনো অনুমান করা যাচ্ছে না ।তবে এ কাজের জন্য চিকিৎসকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।