বাহক নিউজ় ব্যুরো:আজ যে আফগানিস্তানকে আমরা দেখি, আশির দশকের আফগানিস্তানের সাথে তার কোনোরকম মিল নেই। কেমন ছিল আশির দশকের আফগানিস্তান? আসুন জেনে নেওয়া যাক

আফগানিস্তানে কমিউনিস্ট সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে উন্নতির সিঁড়িতে চড়তে থাকে আফগানরা। দেশজুড়ে প্রচুর মেয়েদের স্কুল হয় আফগানিস্তানে। এই সময়ে মেয়েরা ছিল স্বাধীন। ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী ছিল আফগানদের একটা বড় অংশের মানুষ। মেয়েরা তাদের পছন্দ মতো জামা কাপড় পরত। পুরুষদের সাথে অবাধে মিশতে পারতো। কাবুল সহ অন্যান্য বড় শহরগুলোতে গড়ে উঠেছিল হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বার, সিনেমা হল আরো কত কি! এই সময়ে পর্যটন শিল্পেও গুরুত্ব দেয় সরকার। ঢেলে সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন মিউজিয়াম, পার্ক, প্রাকৃতিক জায়গাকে। সারা বিশ্বের মানুষের কাছে অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ছিল এই আফগানিস্তান, যা আজ ভাবাই যায় না।

Advertisements
Appy Family Salon AD Banner Use Code to get Discount

পার্বত্য অঞ্চলের কারণে আফগানিস্তানের মোট আয়তনের মাত্র ১২ শতাংশ চাষযোগ্য জমি।ফলে, পিডিপিএ সরকার জমির মালিকানায় ব্যাপক পরিবর্তন করল। সরকার ঘোষণা করল, কেউ ১৫ একরের বেশি জমির মালিক হতে পারবে না। নতুন এই ব্যবস্থায় লাখ লাখ কৃষক উপকৃত হলেন। ভূমিহীন কৃষকদের ভূমি সংস্কার কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। ভূমি বন্টন বিভাগ থেকে ভূমিহীন কৃষকদের বিনামূল্যে জমি দেওয়া হয়েছিল।

এমনই ছিল জীবনযাত্রা

নানা ক্ষেত্রে প্রগতিশীল ছিল তখনকার আফগানিস্তান। বেআইনি লোন বন্ধ করা হয়েছিল। বিয়ের সময় পণ দেওয়া নেওয়া ছিল নিষিদ্ধ। সংস্কৃতির মুক্তক্ষেত্র ছিল তখনকার আফগানিস্তান। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে গান গাইত, নাটক করত। ছিলনা কোনোরকম ধর্মান্ধতা। কমিউনিস্ট সরকার মৌলবিদের হাতে কোনোরকম ক্ষমতা রাখেনি। রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ও জনগণের সমর্থনে কমিউনিস্ট নেতা বারাক কার্মাল প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে আগের সরকারের নীতিগুলো সংশোধন করে প্রগতিশীলতায় ফিরে যায় আফগানিস্তান। সংবিধান পরিবর্তন হয়, কথা বলার স্বাধীনতা, স্বাধীনভাবে থাকার স্বাধীনতা ফিরে আসে।

আফগানিস্তানে বিশ্ব রাজনীতির প্রভাব, গৃহযুদ্ধ এই সমস্ত কিছু আশির দশকেও ছিল, তবে তখনকার আফগানিস্তানের সামাজিক অবস্থা, জীবন যাপন দেখলে আজ অবাক হতে হয়। বিশ্ব ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেও, আফগানিস্তান যেন ক্রমশই পিছিয়ে গিয়েছে।