বাহক নিউজ় ব্যুরো : রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি দেখে হচ্ছে যেন গাড়িগুলো নদীতে ভাসছে। এদিকে কাজে বেরিয়ে পড়া মানুষেরা আটকে পড়ছেন বাসে, উদ্ধারকারীরা ভেলায় চড়ে তাঁদেরকে উদ্ধার করছেন, রেল স্টেশন জলে নিমজ্জিত। চারিদিকে শুধুই বিশৃঙ্খলা ও হুড়োহুড়ি কারোর কাজে যাওয়ার জন্য, কারোর আবার বাড়ি ফেরার জন্য। পুরো ঘটনাটাই পরিচিত মনে হলেও, ঘটনাস্থল অনেক সাধারণ ভারতবাসীর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে, ওই এলাকা কারোর ফটো ফ্রেমে বা ডিজিটাল স্ক্রীনে নিশ্চয়ই দেখেছেন।
বন্যায় প্লাবিত এলাকার প্রথমে আপনার মাথায় যে জায়গাটি ভেসে উঠেছে, এখানে তার কথা হচ্ছে না। যে এলাকাটির প্লাবনে ভেসে যাওয়ার সমস্যার কথা হচ্ছে সেটি হল লন্ডন। হ্যাঁ, মুশলধারে বৃষ্টির কারণে, লন্ডন হয়েছে প্লাবিত। জানা গেছে, লন্ডনের একাধিক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে জল ঢুকে গেছে। এই পরিস্থিতিতে, জরুরী পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয়, লন্ডনের দুটি হাসপাতালে অজরুরী রোগীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি ঘটনা নয়, বর্তমানের শোচনীয় পরিস্থিতির প্রতিচ্ছবি, ভবিষ্যতের ভয়াবহ পরিস্থিতির আগাম বার্তা।
বর্তমানে যেখানে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুবই নিয়মিত হয়ে গেছে এবং ধীরে ধীরে আরও সাংঘাতিক আকার ধারণ করছে। সেখানে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় লন্ডনের মতো বড়ো শহরের ব্যর্থতা ভয়াবহ ভবিষ্যতের প্রতি সতর্ক করছে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা, বেশ কয়েক বছর ধরেই সতর্ক করেছেন, বিশ্বের একাধিক বড়ো শহরগুলির মতো লন্ডনও জলবায়ু পরিবর্তন তথা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নয়। তাঁদের দাবি হল, এই শহরের সিংহভাগটাই প্লাবনভূমির ওপর নির্মিত এবং ভিক্টোরিয়ান নিকাশি ব্যবস্থা বর্তমানের অত্যাধিক বৃষ্টির প্রহার সহ্য করার জন্য যথেষ্ট নয়।
গ্রেটার লন্ডন কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে, লন্ডনের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা বন্যার কারণে উচ্চ বা মধ্যমস্তরে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, প্রায় ১ মিলিয়ন লন্ডনবাসী ওই প্লাবনভূমিতে বসবাস করে। চলতি সপ্তাহে সোমবারে, লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের তরফে জানানো হয়েছে যে, তারা প্রায় ১০০০টি জরুরী কল পেয়েছেন তারা আটকে পড়া বাসিন্দাদের তরফে। এহেন, সুরক্ষিতভাবে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একাধিক উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।